রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে : ঐশীর আইনজীবী

Looks like you've blocked notifications!

পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে মেয়ে ঐশী রহমানের শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে এই রায়ে ঐশী রহমানের পরিবার সন্তুষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ঐশী রহমানের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার পর ঐশীর আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রায়ে আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা ইঙ্গিত পেয়েছি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

ঐশীর আইনজীবী আরো বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, সাজা আরো কমবে বা খালাস পাবে। কেননা, মেডিকেল বোর্ড ঐশীর বয়স ১৯ নির্ধারণ করে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী যে চিকিৎসক বয়স নির্ধারণ করেন, তাঁকে আদালতে এসে সাক্ষ্য দিতে হয়। কিন্তু ঐশীর ক্ষেত্রে বয়স নির্ধারণকারী চিকিৎসক সেটি করেননি। এ ছাড়া ঐশী মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না।’

অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম জহিরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আদালত পাঁচটি কারণ উল্লেখ করে ঐশীর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছেন। রায়ের কপি পাওয়ার পর এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবী বলেন, ঐশীর বয়স ও বংশগত মানসিক সমস্যা এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আত্মসমর্পণ ও মাদকাসক্তিসহ সার্বিক বিবেচনা নিয়ে আদালত তাঁর দণ্ড কমিয়েছেন।

ঐশী রহমানকে ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর দুবার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। প্রত্যেক মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে দুই বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। একটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর অন্যটি সরাসরি বাতিল হয়ে যাবে।

একই সঙ্গে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছর কারাদণ্ডাদেশ ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

এর আগে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের। এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে ৪৯ সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরের দিন ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার দিন বিকেলে পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন ওই দম্পতির মেয়ে ঐশী রহমান।