বরিশালে দরপত্র জমা দিতে ছাত্রলীগের বাধা
বরিশালে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ। একের পর এক টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে পড়ছে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। সরকারি বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আজ মঙ্গলবার ছাত্রলীগের বাধায় প্রায় কোটি টাকার দরপত্র জমা দিতে পারেননি সাধারণ ঠিকাদাররা।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আজ সকাল থেকে বরিশাল নগরীর আলেকান্দায় অবস্থিত প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বাইরে অবস্থান নেয়। দরপত্র জমাদানকে কেন্দ্র করে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করেনি পুলিশ।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, গত ১০ জুন ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ ৫০টি কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর কিনতে ৯০ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করে। আজ বেলা ১২টা পর্যন্ত ছিল দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়। কিন্তু জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম শুভ, শাহাদাতুল ইসলাম সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান বাপ্পিসহ সভাপতি ইমরান হোসেন, ওয়ালিউল্লাহ অলি, বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল ইসলাম রেজাসহ তাঁদের অনুসারীরা আজ সকাল ১০টা থেকে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে অবস্থান করেন যাতে কোনো ঠিকাদার দরপত্র জমা দিতে না পারেন। কিছুক্ষণ পর অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বিষয়টি লক্ষ করে দারোয়ানকে গেট খুলে দিতে বলেন। সেই গেট আটকানোর বিষয়টি উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে জিজ্ঞেস করলে তাঁকে গালাগালি করে লাঞ্ছিত করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ছাত্রলীগের নেতারা গ্লোবাল ব্র্যান্ড নামের একটি কোম্পানির সাথে এক লাখ টাকার বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হয় যে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার বিভাগে যত ধরনের কাজ আছে তা এই কোম্পানিকে পাইয়ে দেবে। এ কারণে আজ কোনো ঠিকাদারকে প্রবেশ করতে দেয়নি তারা।
এ বিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন জানান, ঝামেলার কথা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল ইসলাম রেজা দাবি করেন, অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম ফ্লোরা লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজটি গুচ্ছ করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। বিষয়টি ধরে ফেললে অধ্যক্ষ তাঁদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। তখন কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
রেজার দাবি নাকচ করে অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্লোরা লিমিটেডের দরপত্রটি ডাকযোগে আসায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তা বক্সে ফেলতে দেয়নি। এ নিয়ে তাদের সাথে সামান্য বাগবিতণ্ডা হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’