ভারি বর্ষণে মংলায় জলাবদ্ধতা, পানিবন্দি লাখো মানুষ
ভারি বর্ষণে মংলা শহরসহ পৌর এলাকার অধিকাংশ আবাসিক এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। গতকাল বুধবার দিনভর বর্ষণে মংলার বিস্তীর্ণ এলাকায় পানি জমে যায়। টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়া দরিদ্র মানুষদের চাল বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
শহরতলির নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকার অনেক বাড়িঘরে হাঁটু সমান পানি জমে গেছে। পানিবন্দি হাজার হাজার পরিবারের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পানিনিষ্কাশনের তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। আর জলাবদ্ধতার কারণে ঘটছে মারাত্মক পরিবেশদূষণ। শহরের কুমারখালী, ঠাকুর রানী ও কাইনমারী খালে স্লুইসগেট নির্মাণকাজ চলার ফলে খালের ওপর বাঁধ দিয়ে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় এখন পর্যন্ত কোনো নর্দমা নির্মাণ করা হয়নি। তাই বৃষ্টিতে জমা হওয়া পৌর এলাকার পানি নিষ্কাশিত হতে পারছে না। বাঁধের মধ্যে ছোট আকারে পাইপ দেওয়া হলেও তা দিয়ে পানি নামতে পারছে না। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন সড়কে নির্মাণকাজ চলায় অধিকাংশ নর্দমা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এ কারণেও বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না।
শহরতলির শেলাবুনিয়া,কুমারখালী,মিয়াপাড়া,জয় বাংলা,চরকানা,সিগন্যাল টাওয়ার,পূর্ব কবরস্থান রোডসহ অধিকাংশ আবাসিক এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অনেক এলাকার রাস্তা-ঘাট পানিতে ডুবে থাকায় পথচারীসহ যানবাহন চালকরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
গতকাল বুধবার সারাদিন ভুক্তভোগী পৌরবাসীকে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য পৌর কার্যালয়ে ধরনা দিতে দেখা গেছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন,পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে পানিনিষ্কাশনের আবেদন জানিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
মংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র জুলফিকার আলী বলেন, ‘পানিনিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমি জলাবদ্ধ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে এসেছি। পানি নামানোর জন্য পাইপ বসিয়ে কিংবা নর্দমা কেটে পানি সরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, খালে বাঁধ থাকায় পানি নামতে পারছে না। পানি নামানোর যে পাইপ আছে, জোয়ারের সময় তা দিয়ে পানি ঢুকে পড়ায় জলাবদ্ধতা কমছে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলী প্রিন্স বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষ কাজে বের হতে পারছে না। তাই এসব দরিদ্র মানুষের মধ্যে এরই মধ্যে পাঁচ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। আরো ত্রাণ সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই তা দ্রুত দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হবে।’