ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন, সন্তান পেল পরিচয়, দায়িত্ব রাষ্ট্রের
লক্ষ্মীপুরে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের দায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ধর্ষণে সহযোগিতা করায় এক নারীকেও একই সাজা দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ধর্ষণের ফলে ওই নারীর গর্ভের ১১ বছর বয়সী কন্যাসন্তানকে রাষ্ট্রীয় খরচে লালন-পালনের জন্য জেলা প্রশাসককে (ডিসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তরুণীর স্বামী ও কন্যাসন্তানের বাবা হিসেবে আসামি মাইন উদ্দিনের পরিচয় বহন করার জন্য বলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইদুর রহমান গাজী এ আদেশ দেন।
জজকোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি (এপিপি) আবুল বাশার এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন—মাইন উদ্দিন ও তাঁকে সহযোগিতাকারী হালিমা খাতুন। মাইন উদ্দিন সদর উপজেলা শাকচর গ্রামের বাসিন্দা। হালিমা খাতুনও একই বাড়ির বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাইন উদ্দিন ওই তরুণীর সম্পর্কে চাচাতো ভাই। সে সুবাদে মাইন উদ্দিন প্রায়ই ওই তরুণীদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। তিনি বিভিন্ন সময় তাঁকে কুপ্রস্তাব দিতেন। এতে রাজি না হওয়ায় মাইন তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
২০০৫ সালের ১০ এপ্রিল রাতে হালিমা খাতুন শাশুড়ি বাড়িতে না থাকার কথা বলে ওই তরুণীকে তাঁর সঙ্গে ঘুমানোর জন্য ডেকে নেন। ওই রাতে হালিমার সহযোগিতায় মাইন উদ্দিন তাঁদের ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় ওই তরুণী মাইনকে দেখে চিৎকার দিয়ে ওঠেন।
পরে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মাইন উদ্দিন ধর্ষণ করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। কিছুদিন পর তরুণীর গর্ভে সন্তান আসে। স্থানীয় লোকজন ঘটনার সত্যতা পান। তবে সেই সময় মাইন উদ্দিন ‘সম্পর্কের’ কথা অস্বীকার করেন।
ওই বছরের ৩০ অক্টোবর অন্তঃসত্ত্বা ওই তরুণী বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণ ও শুনানি শেষে আজ আসামিদের উপস্থিতিতে আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।