নোয়াখালীতে তিন হত্যা মামলার আসামি ২২, নারী আটক

নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তিন ভাইকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে আর বাকিরা অজ্ঞাতপরিচয়।
আজ মঙ্গলবার নিহত তিনজনের ভাই মোরশেদ আলম সোনাইমুড়ি থানায় এই মামলা করেন।
এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় নিহত তিন ভাইয়ের প্রতিবেশী ফাতেমা বেগম নামের এক নারীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
এদিকে, নোয়াখালীর পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ ও সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে নাটেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ ও সোনাইমুড়ি থানার বাসিন্দাদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
গত ১৯ জুলাই দুপুরে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের কাজীনগর এলাকায় কাজীবাড়ির মসজিদের সামনে তিন সহোদরকে পিটিয়ে, কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।
নিহতরা হলেন কাজী মোকসেদ উল্লাহর তিন ছেলে কাজী হারুন উদ্দিন (৩৫), কাজী বাবলু (৩০) ও কাজী কামাল উদ্দিন (২৮)।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাজীবাড়ির সামনে মসজিদের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে বেশ কয়েকদিন থেকে নিহতদের পরিবারের লোকজনের সাথে প্রতিপক্ষের বিরোধ চলে আসছিল।
নিহতদের পরিবারের দাবি, বিরোধপূর্ণ জমিতে তারা মসজিদ নির্মাণ করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বিরোধপূর্ণ জমিটিতে মসজিদ না করে একটি বিপণীবিতান তৈরি করার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে নিহত হারুন কয়েকদিন আগে এক ব্যক্তির ওপর হামলা করেন। এ ঘটনার জের ধরে ক্ষুব্ধ প্রতিপক্ষের সঙ্গে ঘটনার দিন আবার তাদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই পরিবারের তিনজনকে গুলি করে এবং পায়ের রগ কেটে দেয়। গুরুতর আহত কামালকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে এবং বাকি দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
তবে সেদিন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন স্বপন দাবি করেন, ‘গণপিটুনিতে মারা গেছেন ওই তিন ভাই।’
ঘটনার তদন্তকারী পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন- পিটিয়ে, কুপিয়ে ও গুলি করে তিন ভাইকে খুন করা হয়েছে।’ গুলির বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য তাঁকে আবার প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, গুলি করার শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন এলাকাবাসী। নিহতদের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দায়ের কোপের চিহ্ন ছিল। এদের মধ্যে দুই ভাইকে পায়ের রগ কেটে ও এক ভাইকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।