পানি ঢুকছে তালার গ্রামে গ্রামে
অতি বৃষ্টিতে কপোতাক্ষ নদের পানি উপচে তলিয়ে যাচ্ছে তালা উপজেলার একাধিক গ্রাম। এরই মধ্যে কপোতাক্ষ নদের নতুন বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা দিয়েছে বড় আকারের ভাঙন। কপোতাক্ষ নদের পানি এখন নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে সংযোগ খাল দিয়ে ধেয়ে আসছে লোকালয়ে।
পলি জমে দুই দশক ধরে স্রোতহীন হয়ে পড়েছে কপোতাক্ষ নদ। বৃষ্টির কারণে নদের দুই পারের একাধিক গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। খনন করে দুই পারের মানুষকে জলাবদ্ধতার কবল থেকে রক্ষার সেই চেষ্টায়ও যেন শেষ রক্ষা হচ্ছে না। কেননা নিয়মিত খনন করে কপোতাক্ষর দুই পার যখন বাঁধার কাজ চলছে, তখনই অতি বৃষ্টিতে নদের পানি উপচে তলিয়ে যাচ্ছে গ্রাম।
এ বিষয়ে তালার ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রঞ্জন রায় বলেন, ‘ইসলামকাটি ইউনিয়নের দুটি পয়েন্টে এমন ভাঙন দেখা দিয়েছে।’
তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়নের গোপালপুরে বাঁধ ভেঙে পানি আসছে খালে। এ ছাড়া শালিকায় জোয়ারাধার প্রকল্পের ( টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট - টিআরএম) বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করেছে গ্রামের মধ্যে।’
এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনদ কুমার। তিনি বলেন ‘আমরা ধসে যাওয়া বাঁধগুলো সংস্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি । কিন্তু অতি বৃষ্টির কারণে তাতে পুরোপুরি সফল হওয়া যাচ্ছে না।’
ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবু আলম, আসাদ মৃধা ও এজাহার আলী জানান, ধসে যাওয়া ইসলামকাটি বাউখোলা ঘোষপাড়া নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কারে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছে এলাকার নারী-পুরুষ সবাই। এই বাঁধ রক্ষা করতে না পারলে ইসলামকাটির ১৬ গ্রাম ছাড়াও কুমিরা ও তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হবে।’
এদিকে গোপালপুর স্লুইস গেটসংলগ্ন নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এ ব্যাপারে তালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, জনগণের স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কারের কাজ তিনিও তদারকি করছেন।
কপোতাক্ষ নদের পানি নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গ্রামে ঢুকছে এমন খবর পেয়ে তালা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনদ কুমার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান। তিনজনই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাঁধ সংস্কারের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।