তুলসী হত্যাকাণ্ডে পাবনা উত্তাল
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/08/02/photo-1438513849.jpg)
পাবনায় হরিজন সম্প্রদায়ের যুবক তুলসী চন্দ্র দাসকে (২৫) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে ওই সম্প্রদায়ের লোকজন। আজ রোববার সকালে তারা তুলসীর লাশ নিয়ে পুরো শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে। তুলসীর খুনিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে স্লোগানে প্রকম্পিত হয় পুরো শহর।
এ ঘটনায় তুলসী হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা শাওন চন্দ্র দাস আজ রোববার পাবনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে পাবনা শহরের নিয়ম ফুড লিমিটেড কারখানার মালিক মো. ফরহাদ হোসেন, তাঁর ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আবদুল হান্নান ও সাবেক পৌর কমিশনার কে এম হাসান হীরা, হীরার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রুমন, ছাত্রলীগকর্মী সোহেলসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ শুধু হীরাকে গ্রেপ্তার করেছে।
হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন অভিযোগ করেছে, গতকাল শনিবার বিকেলে পাবনা শহরের নিয়ম ফুড লিমিটেড কারখানায় একটি সাইকেল চুরির অভিযোগ এনে কারখানার পরিচ্ছন্নতাকর্মী হরিজন সম্প্রদায়ের তুলসী চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যা করেন কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা। এই ঘটনার পর হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন গতকাল সন্ধ্যায় ফরহাদ, আবদুল হান্নান ও রুমনদের বাসভবন ভাঙচুর করে এবং শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে তুলসী চন্দ্র দাসের ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর লাশ আজ রোববার সকালে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই লাশ নিয়ে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন সকাল থেকে সারা শহরে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা সড়ক অবরোধ করে তুলসীর খুনিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। পরে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় এবং স্মারকলিপি দেয়।
পরে পাবনা জেলা পরিষদের প্রশাসক এম সাইদুল হক চুন্নু, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মোশারোফ হোসেন, জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দীন, পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবীরসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বধন কর্মকর্তারা আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিলে তারা শান্ত হয়।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসানুল হক জানান, পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি কে এম হাসান হীরাকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পাবনার পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবীর বলেন, পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশ কাউকে ছাড় দেবে না। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।