‘ধর্ষণের শিকার রোহিঙ্গা নারীদের তালিকা করা দুরূহ’

Looks like you've blocked notifications!
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে আজ সোমবার সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল প্রমীলা পাটেন। ছবি : পিআইডি

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারী যাঁরা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, এমন তালিকা করা ‘দুরূহ’। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এ কথা জানিয়েছেন। সামাজিক ও মানসিক বাধাই এর অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি।

আজ সোমবার জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল প্রমীলা পাটেনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এসব কথা বলেন মন্ত্রী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সচিবালয়ে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে জাতিসংঘের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানান মোহাম্মদ নাসিম।

ধর্ষণের শিকার নারীরা যেন প্রতিকার পায় সে কারণে তাঁদের একটা তালিকা তৈরি করার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান প্রমীলা পাটেন।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসা দিয়ে এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটরি জেনারেল। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র এলাকায় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রমীলা পাটেন।

পাটেন বলেন, ‘নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি আহত ও ধর্ষিতাদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে ধর্ষণের শিকার নারীরা যেন পরবর্তীতে প্রতিকার পায়, সে লক্ষ্যে তাদের সঠিক তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে।’

এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উপমহাদেশের নারীরা সামাজিক ও মানসিক বাধার কারণে ধর্ষণের কথা প্রকাশ্যে বলতে চায় না। এ কারণে তাঁদের সঠিক তালিকা তৈরির কাজটি বেশ দুরূহ।’ তারপরও সরকার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় এ ক্ষেত্রে উদ্যোগ দেবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের গণনির্যাতন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদেরকে মানবতার দৃষ্টিকোণ থেকে আশ্রয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নির্দেশে খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে সরকার তাদের খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে। বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি সংস্থাও সরকারকে সহায়তা দিচ্ছে। এরই মধ্যে কক্সবাজারের উখিয়া ও বান্দরবানে ৭৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। শতাধিক চিকিৎসক ও প্রায় ৭০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রেষণে পাঠানো হয়েছে। ২৩১টি টিকাদানকারী দল এরই মধ্যে সাত লাখ রোহিঙ্গার মাঝে কলেরা, এমআর এবং খাবার পোলিও টিকাসহ বিভিন্ন টিকা বিতরণ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো সীমিত সম্পদের দেশে বহিরাগত প্রায় সাত লাখ মানুষকে দীর্ঘদিন এই সাহায্য চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না।’

এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ সচিব ফয়েজ আহম্মেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক কো-অর্ডিনেটর মিয়া সেপ্পোসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।