কয়রায় বেড়িবাঁধ ভেঙে দুই গ্রাম প্লাবিত
খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙে শকিবাড়িয়া ও গাববুনিয়া নামের নদী তীরবর্তী দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ৫০টি পরিবার ও ছোট-বড় মিলিয়ে ৪০টি চিংড়িঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ সোমবার ভোরে ভাটার সময় বাঁধের ওই অংশের ২০০ মিটার ধসে যায়। দুপুরে সেখান দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে। দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করতে না পারলে আরো কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে যাবে। কেননা দিনে দুবার জোয়ার-ভাটার নিয়মে পানি নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে। তখন বাঁধের ভাঙনের দৈর্ঘ্যও বৃদ্ধি পাবে। গোটা উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পানির নিচে চলে যাবে।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক দিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায়। এতে বাঁধের দুর্বল অংশ ভেঙে নদের পানি প্রবেশ করে। বাঁধের যে অংশ ভেঙেছে সেখানে একটি চিংড়ি ঘেরের পানি সরবরাহের জন্য পাইপ বসানো ছিল বলে তাঁরা জানান।
শাকবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ও উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সাধনা খাতুন জানিয়েছেন, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তাঁর নিজেরসহ গ্রামের ৫০-৬০টি পরিবারের ঘরবাড়ি লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় তাঁরা পাউবোর বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
ওই গ্রামের শান্তিরঞ্জন মৃধা জানান, বাঁধ ভেঙে তাঁর ১৫ বিঘার চিংড়িঘেরটি সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। এতে তাঁর চার লাখ টাকার মাছ নদীতে চলে গেছে।
উত্তর বেদকাশী ইউপির চেয়ারম্যান সরদার মতিয়ার রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘বাঁধের ওই স্থান সংস্কারের কাজ চলমান ছিল। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া শুরু হলে সেখানে কাজ বন্ধ করে ঠিকাদার চলে যান। আমরা পাউবোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি।’
চেয়ারম্যান জানান, বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় দুই গ্রামের ৪০টি পরিবারের বাড়িঘরসহ প্রায় ২০০ একর জমির চিংড়িঘের পানিতে ভেসে গেছে।
পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল মতিন জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নদীতে পানির স্রোত কমলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কয়রার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ এনামুল কবির বলেন, ‘খবর পেয়ে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া এবং তাদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য কাজ করা হচ্ছে।’ তিনি জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁধটিসহ উপজেলার অন্যান্য স্থানে জরুরি পদক্ষেপ নিতে পাউবোকে জানানো সত্ত্বেও তারা এ ব্যাপারে যথেষ্ট উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। স্থানীয়রা এলাকা ছেড়ে পাশের এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।