ধর্মঘট হয়নি রাজশাহীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে ধর্মঘট ডাকলেও আজ মঙ্গলবার নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক নিয়মেই চলেছে। ধর্মঘটের কোনো প্রভাব পড়েনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। ছাত্রছাত্রীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। এ নিয়ে ধর্মঘট আহ্বানকারীদের কোনো কর্মসূচিও চোখে পড়েনি।
গত সোমবার দুপুরে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় নাগরিক সমাজের ব্যানারে বোর্ড চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে মহাসমাবেশ করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার নগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট কর্মসূচির ডাক দেয় রাজশাহী নাগরিক সমাজ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ডাকলেও আজ নগরীর শহীদ কর্নেল কাজী এমদাদুল হক পাবলিক স্কুল, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সৃষ্টি সেন্ট্রাল স্কুল, শাহীন ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শিমুল মেমোরিয়াল নর্থ সাউথ স্কুলসহ বিভিন্ন প্রাইভেট ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একই চিত্র লক্ষ করা গেছে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে।
রাজশাহী সরকারি পিএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল, সরকারি সিরোইল হাই স্কুল, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী সিটি কলেজ, নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজসহ বিভিন্ন সরকারি স্কুল ও কলেজে অন্যান্য দিনের মতোই ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তবে রাজশাহী নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক ও জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্টের রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা দাবি করে বলেন, ধর্মঘট পালিত হয়েছে। হয়তো কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা হয়েছে। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক আবুল হায়াত রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন। এর এক মাস পর থেকেই তাঁকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু করে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্টের রাজশাহী জেলা শাখা। গত শুক্রবার নগরীর শাহ মখদুম কলেজ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নাগরিক সমাজের ব্যানারে সোমবার সমাবেশ আহ্বান করা হয়। রোববার রাতেই লক্ষ্মীপুর মোড়ে সমাবেশের মঞ্চ প্রস্তুত করা হয় এবং মঞ্চের পেছনে ‘শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবক সমাবেশ’-এর ব্যানার টাঙানো হয়। কিন্তু সমাবেশ শুরুর আগেই পুলিশ এসে মঞ্চের দখল নিয়ে নেয়। তারা কাউকে মঞ্চে উঠতে দেয়নি।
দুর্নীতির অভিযোগ এবং আন্দোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ড. আবুল হায়াত বলেন, সরকার তাঁকে নিয়োগ দিয়েছে। সরকার যখন তাঁকে অপসারণ করবে, তখন তিনি চলে যাবেন। তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁর একটিও কেউ প্রমাণ করতে পারবে না, এটা তাঁর চ্যালেঞ্জ।
বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষা বোর্ডকে তিনি একটু শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন, এটা হয়তো কারো ভালো লাগছে না। তাই তাঁরা তাঁকে অপসারণ দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।