দুই কারাগারের মহিলা ওয়ার্ড প্রস্তুত
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। লাগানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা।
আজ বুধবার দুপুরের দিকে কারাগারসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব। কারাগারের পুরান অভ্যর্থনা ভবন সংলগ্ন একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে সিসি ক্যামেরা লাগাতে দেখা গেছে।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, পুরান কারাগারের মহিলা ওয়ার্ড সংলগ্ন দুটি কক্ষ ধোয়া-মোছা করে পরিষ্কার রাখা হয়েছে।
এদিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের সামনে ও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। কারাগারের মহিলা ওয়ার্ডের একটি কক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য।
এ ব্যাপারে কারা পুলিশের কোনো কর্মকর্তা বক্তব্য দিতে চাননি। তবে এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
পুরোনো জেলখানার কয়েকটি কক্ষের সংস্কার করা হচ্ছে বলে খবর পেয়েছেন জানিয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সেটি খালেদা জিয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে কি না? জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোথায় রাখা হবে বা কী করা হবে, তা কারা কর্তৃপক্ষই ভালো জানে। এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’
সাজা হলে খালেদা জিয়াকে কী মর্যাদায় কোথায় রাখা হবে, তা জানতে চান সাংবাদিকরা। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সাজা হলে জেল কোড বা কারাবিধি অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’
সারা দেশে ব্যাপক ধরপাকড়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তাঁরা সেই রুটিন কাজই করছেন। এ ছাড়া পুলিশের প্রিজনভ্যানে হামলার পর ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে তারা।
আগামীকাল ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে। ওই মামলার প্রধান আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। অন্য আসামিরা হলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এতিম তহবিল নামে নতুন একটি হিসাব খোলা হয় এবং বিদেশ থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা আসে ওই হিসাবে। পরে ওই তহবিল থেকে দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে স্থানান্তর করা হয়। অভিযোগ আনা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেখান থেকে আসামিরা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। মামলা দায়েরের ১৩ মাস পর ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর-রশিদ।