অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৪ বছরে ৪ বিচারক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর থেকে রায়ের তারিখ ঘোষণা পর্যন্ত এই চার বছর সময়ের মধ্যে চারবার বিচারক পরিবর্তন হয়েছে।
প্রত্যেক বিচারকের ওপর অনাস্থা দিয়ে তাঁকে পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এমনকি মামলার বর্তমান বিচারক বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের ওপর অনাস্থা দিলেও সেই আবেদন হাইকোর্টে নামঞ্জুর হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার তাঁর অধীনেই রায় ঘোষণা করা হচ্ছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ এ মামলার অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। পরে ওই বিচারকের প্রতি খালেদা জিয়া অনাস্থা জানালে মামলা কার্যক্রম শুরু করেন ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদার। তিনি প্রায় আড়াই বছর এ মামলা পরিচালনা করে মামলার প্রায় শেষ প্রান্তে নিয়ে আসেন। যুক্তিতর্কের আগে তিনি খালেদা জিয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তাঁর প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করলে তিনি তা নাকচ করে দেন।
পরে ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আদালত পরিবর্তনে হাইকোর্টে আবেদন করা হলে ওই বছরেরই ৮ মার্চ মামলাটির আদালত পরিবর্তনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তখন সেটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে মামলা স্থানান্তর করা হয়।
এর পর গত বছরের ৩০ মার্চ থেকে খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি গ্রহণ শুরু করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধেও অনাস্থা জ্ঞাপন করেন খালেদা জিয়া।
অনাস্থার কারণ হিসেবে বলা হয়, এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার সময় বিচারক মো. কামরুল হোসেন মোল্লা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা ছিলেন এবং তিনি অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন।
এই অনাস্থার পরে হাইকোটের নির্দেশে ২০১৭ সালের ১৭ মে মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় বর্তমান বিচারক ড. আখতারুজ্জামানকে। সেই থেকে তিনিই মামলা পরিচালনা করে আসছেন। শুনানি ও যুক্তিতর্ক শেষে তিনিই রায়ের দিন ধার্য করেন।
একনজরে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা
- রমনা থানায় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই মামলা দায়ের করা হয়।
- মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদ।
- এজাহারে টাকা আত্মসাতের (ঘটনার) সময়কাল হিসেবে ১৩ নভেম্বর ১৯৯৩ হতে ২৮ মার্চ ২০০৭ সালকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- ২০১০ সালের ৫ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
- মামলার কার্যদিবস ২৬১ দিন ।
- খালেদা জিয়া হাজিরা দেন ৪৩ দিন।
- খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন আট দিন।
- গত ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ রায়ের দিন ধার্য করেন বিশেষ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান।
- রায়ের দিন ধার্য ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।