খালেদা জিয়ার সাজা নিয়ে আইনি সুপারিশের অপেক্ষায় দুদক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে আপিল করা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য লিগ্যাল টিমের সুপারিশের অপেক্ষায় আছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে রাজধানীর দুদক কার্যালয়ে আজ বুধবার রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সার্টিফাইয়েড কপি পাওয়ার পরে এগুলো পর্যালোচনা হবে। আমাদের লিগ্যাল টিম সেটা দেখবে। দেখার পর তাঁরা একটা সুপারিশ করবে আমাদের কাছে। কমিশন বসে কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয় সেজন্য আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা হুট করে কোনো কিছু করতে রাজি না। চিন্তাভাবনা করেই কাজ করতে চাই। খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে দুদক আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ীই এগোবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের মামলা নিয়ে দুদক যতটা উদ্যোগী সে তুলনায় বড় বড় অর্থ কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের এখনো আইনের আওতায় নিয়ে আসতে দুদকের ব্যর্থতা রয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা আজ যেটা দেখছেন কাল সেটা নাও দেখতে পারেন। আমরা সবাই আইনের মধ্যে, কেউই আইনের বাইরে না।’
অপর প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনের কাছে জাতির প্রত্যাশা সঙ্গত কারণে বেড়েছে। এই প্রত্যাশা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পূরণ করতে না পারলেও কমিশন দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমি আগেও একাধিকবার বলেছি, কমিশনের একার পক্ষে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়। বিভাজিত নয়, সম্মিলিতভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হলেই দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নসহ সব উন্নয়ন সম্ভব।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার লাল সূর্য উদিত হয়। এই মহান ভাষা শহীদরাই তাঁদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমরা সবাই যদি মানুষের কল্যাণ, ভাষা এবং ভাগ্যোন্নয়নে সম্মিলিতভাবে কাজ করি, তবেই তাদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদেরও আত্মত্যাগের প্রয়োজন রয়েছে।
এ সময় দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিনসহ কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দীন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
সাজা ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। রায়ে আসামি তারেক রহমান, শরফুদ্দীন আহমেদ ও মমিনুর রহমানকে পলাতক দেখানো হয়েছে।