খাগড়াছড়িতে পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে সহস্রাধিক মানুষ

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : এনটিভি

খাগড়াছড়ি জেলা সদরে পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে সহস্রাধিক মানুষ। কয়েক দিনের টানা বর্ষণে জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে মাটি ধসে পড়ছে। যেকোন সময় ব্যাপক পাহাড়ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ের ঢালে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে স্থানীয় প্রশাসন। 

খাগড়াছড়ি শহরের কলাবাগান, নেন্সিবাজার, মোল্লাপাড়া, আঠার পরিবার, শালবন ও মোহাম্মদপুর এলাকায় পাহাড়ের ঢালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসবাসকারীরা আতঙ্কে ভুগছেন। 

এদিকে, শহরের বেশ কয়েকটি স্পটে পাহাড় কেটে বা পাহাড়ের পাদদেশে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ বেড়ে চললেও পাহাড় কেটে বাড়িঘর নির্মাণ বন্ধে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। অন্যদিকে, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীরা বলছে, থাকার জায়গা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা পাহাড়ের পাদদেশে বাস করছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী এক ব্যক্তি পাহাড়ের মাটি কাটছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ওপর থেকে পানি পড়ে পাহাড় ধসে পড়ছে। তাই মাটি সরানো হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, খাগড়াছড়িতে প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে পাহাড়ের পাদদেশে নির্মাণ করা হচ্ছে বাড়িঘর। বাড়িঘর নির্মাণে মানা হচ্ছে না ভবন নির্মাণ নীতিমালা (বিল্ডিং কোড)। ফলে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ধসের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। পাহাড় কাটা বন্ধ ও পাহাড়ের ঢালে বসতি স্থাপন বন্ধের উদ্যোগ না নিলে যেকোনো সময় প্রাণহানির শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

পাহাড়ে বসবাসকারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসে পড়ছে। এ ছাড়া বর্ষা এলে নিচে যারা বসাবাস করে, তারা নিচ থেকে মাটি কাটে। ওপর থেকে মাটি ধসে পড়ে। পাহাড়ে শত শত পরিবার ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। সরকার থেকে একটি সুরক্ষা দেয়াল করার ব্যবস্থা করার দাবি জানান তাঁরা।

এদিকে, গত কয়েক দিনের বর্ষণে ডিসি বাংলোর নিচে ও সবুজবাগ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধস দেখা দিয়েছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। তবে পাহাড়ধসে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় থাকলেও এসব মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রশাসনের যেমন উদ্যোগ নেই, ঝুঁকিপূর্ণ বসতির তালিকাও নেই প্রশাসনের কাছে। 

এ নিয়ে পৌরসভার মেয়র ও জেলা প্রশাসকের বক্তব্য পরস্পরবিরোধী। খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল আলমের অভিযোগ, পাহাড়ের পাদদেশে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে শত শত পরিবার বসবাস করছে। এরই মধ্যে খাগড়াছড়ি পৌর প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক সমন্বয়হীনতার কারণে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের সরানো সম্ভব হচ্ছে না। 

তবে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বৃষ্টি হলে ভূমিধসের আশঙ্কা থাকে। লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন করা হবে। পৌরসভা থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন থেকেও মাইকিং করা হবে, যাতে পাহাড়ধসের কারণে তাদের কোনো ক্ষতি না হয়।