কুড়িগ্রামে বন্যার পানি কমেছে, শুরু হয়েছে ভাঙন

Looks like you've blocked notifications!
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের নয়ারহাট রাজার। ছবি : এনটিভি

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তার পানি হ্রাস পাওয়ায় জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

গত পাঁচদিনে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীন হয়েছে রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, নয়ারহাট বাজারের আড়াই শতাধিক দোকান, নয়ারচর ফাজিল মাদ্রাসা, পাঁচটি মসজিদ, চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ তিন শতাধিক ঘরবাড়ি। গৃহহারা পরিবারগুলো সবকিছু হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

রাজীবপুর উপজেলার নয়ার চর গ্রামের বাসিন্দা ও নয়ারহাট বাজারের ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘গত কয়েকদিনের ভাঙনে চরাঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যবাহী নয়ারহাট বাজারের আড়াই শতাধিক দোকানপাট ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হয়ে গেছে। ব্যবসা বন্ধ থাকায় আমরা ব্যবসায়ীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে অতিকষ্টে দিনযাপন করছি। আমরা সরকারের কাছে নদীভাঙন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, ‘ইউনিয়নের তিন ভাগের দুই ভাগ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীভাঙন রোধে বারবার উপজেলা পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এই ইউনিয়নে নদী ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। ব্যবস্থা না নিলে পুরো ইউনিয়নই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।’

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজীবপুর উপজেলার নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। নদীভাঙনরোধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। আগামী সংসদ অধিবেশনে নদীভাঙনরোধে কার্যকরী ব্যবস্থার বিষয়ে কথা বলব।’

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, নদী ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে বন্যার পানি ধীরগতিতে নামতে থাকায় জেলার নদ-নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের চর ও দ্বীপ চরগুলোর বন্যাকবলিত মানুষ ঘরে ফিরতে পারেনি। বানভাসি এসব পরিবারগুলো বাঁধ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১২ সেন্টিমিটার এবং নুন খাওয়া পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।