পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি
পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি দীপংকর তালুকদার। তিনি বলেছেন, আমাদের এই সমাবেশ অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে। ব্যক্তি কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়।
রোববার সকালে রাঙামাটিতে সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’ এই স্লোগানে আয়োজিত মহাসমাবেশে দীপংকর তালুকদার এসব কথা বলেছেন।
দীপংকর তালুকদার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে একজন উপজেলা চেয়ারম্যান মারা যাওয়ার পরও অন্য উপজেলা চেযারম্যানরা আতঙ্কে চুপচাপ। আমাদের কথা শক্তিমান চাকমা কিংবা পরদিন যারা মারা গেছে তারা আমাদের কেউই নয়। আর তাদের হত্যা করা হয়েছে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে, যেখানে প্রাণ গেল একজন নিরীহ বাঙালি গাড়িচালক সজীব হাওলাদারের। আমরা আগে থেকেই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না হলে পাহাড়ে শান্তি ফিরবে না, এইসব হত্যাকাণ্ডও হতো না।’
দীপংকর তালুকদার আরো বলেন, ‘নানিয়ারচরের ঘটনায় ইতোমধ্যেই মামলা রুজু হয়েছে। এখানকার প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী, বিজিবি কার্যক্রম তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আমরা মনে করি, বিরাজমান পরিস্থিতিতে এটাই কেবল নয়, অভিযান আরো জোরদার করতে হবে। আজ পাহাড়ে সেনাবাহিনী, পুলিশের নামে তারা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মধ্যে যেন বিভেদ সৃষ্টি না করতে পারে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফিরাজা বেগম চিনু বলেন, ‘আজকে আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি পাচ্ছি না। সন্ত্রাসীরা, চাঁদাবাজরা যাকে যেভাবে পারছে হত্যা করছে। আমরা দেখেছি দিনের বেলা প্রকাশ্যে একজন চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পরদিন তার শেষকৃত্যে যাওয়ার পথে নিহত হন আরো পাঁচজন। যারা পাহাড়ে অস্ত্র, চাদাঁবাজি, আধিপত্য বিস্তার করছে, তারাই এসব ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। আমরা মাটি ও মানুষের অধিকারের কথা বলি। যতদিন পর্যন্ত পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হবে না। ততদিন পর্যন্ত চুক্তিও বাস্তবায়ন হবে না।’
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর, বরকল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার চাকমা, রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাট্রিজের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল, রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন।
সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধানমন্ত্রী ববাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এর আগে সকালে পাহাড়ে অব্যাহত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন, গুম, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টির দাবিতে রাঙামাটি পৌরচত্বর থেকে একটি মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউ মার্কেট গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
একই ব্যানারে মহাসমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে দীপংকর তালুকদারকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই ‘সচেতন নাগরিক কমিটি’। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় চারটি আঞ্চলিক দলের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম খুনের প্রতিবাদ ও পাহাড় থেকে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে কর্মসূচি পালন করে আসছে।