লংগদুতে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের বসতঘর নির্মাণ শুরু
এক বছর আগে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় এক যুবলীগ নেতাকে হত্যার জেরে ক্ষুব্ধ বাঙালিদের অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের বসতবাড়ি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। বুধবার ওই কাজ শুরু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ১৭৬টি বসতঘর নির্মাণ করার জন্য মোট ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প ২-এর মাধ্যমে রাঙামাটি লংগদু উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের বসতঘর নির্মাণ করা হবে।
এ উপলক্ষে বুধবার সকালে স্থানীয় তিনটিলা বৌদ্ধ বিহার এলাকায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
লংগদু সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুলিন মিত্র চাকমা আদুর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা হেডম্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক কেরল চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মো. জানে আলম, লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেনসহ ক্ষক্ষিগ্রস্ত পরিবার ও স্থানীয় লোকজন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষে বিত্র বিকাশ চাকমা বলেন, ‘যতদ্রুত সম্ভব ঘরবাড়ি নির্মাণকাজ যেন শেষ হয় এবং দোকান ঘরগুলোর ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পায় নাই। আমাদের এক বছরের জন্য ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে চাল দিলেও তার সময় শেষ প্রায়।’ তাই আরো বাড়তি সময় এটি চালু রাখার দাবি জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার বলেন, ‘এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যারাই জড়িত থাক না কেন তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অনেকে বাঁচার জন্য জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে আমাদের সাথে থাকতে পারে তাদেরও কোনো ছাড় নাই। ঘর নির্মাণ হলেই সমস্যা সমাধান হবে না। সমস্যা সমাধানের জন্য এই রকম ঘটনা আর যাতে না হয় সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবির বিষয়ে দীপংকর তালুকদার জানান, ভিজিএফ কার্ডের এক বছর আরো মেয়াদ বৃদ্ধি করার ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা করা এবং যে ১৮টি দোকানঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই বিষয়ে সরকার যাতে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয় সেই বিষয়েও সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করবেন তিনি।
২০১৭ সালের ১ জুন লংগদু সদর ইউনিয়নের যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোটরসাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়ন ভাড়া নিয়ে যাত্রীসহকারে খাগড়াছড়ি যান। ওই দিন বিকেলে খাগড়াছড়ির চার মাইল এলাকায় তাঁর লাশ পাওয়া যায়। পরের দিন ২ জুন তাঁর লাশ নিয়ে জানাজার জন্য বাইট্টাপাড়া থেকে লংগদু উপজেলা পরিষদ মাঠে রওনা দিলে তিনটিলা পাড়ায় মিছিল আসার পর মিছিল থেকে হঠাৎ করে পাহাড়িদের বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয় । এতে তিনটি গ্রামের ২১৩টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।