ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শিশুহত্যা, শিক্ষক আটক
রাঙামাটিতে তৃতীয় শ্রেণিপড়ুয়া এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুকে হত্যার অভিযোগে অংবাচিং মারমা বামং (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তির কাছেই ‘প্রাইভেট’ পড়ত শিশুটি। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটিকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তাকে হত্যা করে বামং।
আজ রোববার কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের পূর্ব কোদালা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুর নাম মিতালী মারমা। সে পূর্ব কোদালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী এবং একই এলাকার সাথুই অং মারমার মেয়ে।
চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘আজ রোববার ভোরে আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুর বস্তাবন্দি লাশসহ অংবাচিং মারমা বামাংকে আটক করি।’
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অংবাচিং মং মারমা শিশুহত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেন ওসি আশরাফ।
ওসি আশরাফ উদ্দিনের ভাষ্য, তিনি অন্য শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে এ ছাত্রীকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেন। এ সময় সে চিৎকার শুরু করলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাড়ির সিলিংয়ে লুকিয়ে রাখেন। পরে আজ ভোরে তার লাশ ফেলে দেওয়ার জন্য বের হন।
হত্যাকারীর বরাত দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘শনিবার সকাল ৭টায় চার শিশু প্রাইভেট শিক্ষক অংবাচিং মারমা বামংয়ের বাসায় পড়তে যায়। সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চার শিশুকে পড়ানো শেষে তিন শিশুকে ছুটি দিলেও তৃতীয় শ্রেণি পড়–য়া ওই শিশুকে রেখে দেয় সে। পরে সকাল ১০টার দিকে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে শিশু চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। এ সময় শিশুটিকে গলায় সুতলি ও ঘামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে অংবাচিং।’
পুলিশ আরো জানায়, এ ঘটনার পর বিকেলে শিশুকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের সদস্যরা প্রাইভেট শিক্ষকের বাসায় গেলে সে তাদের সবাইকে ছুটি দিয়েছে বলে জানায়। তবে ওই শিক্ষকের অসম্পূর্ণ কথায় সন্দেহ বাঁধে পরিবারের সদস্যদের। পরে তারা রাতেই শিশু নিখোঁজের খবরটি পুলিশকে জানায়।
রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সায়ামং মারমা বলেন, ‘শিশুটির নিখোঁজ থাকার বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়। রোববার ভোররাতে একটি বস্তা নিয়ে অংবাচিং কোথাও যাচ্ছেন এমন খবর পেয়ে আমরা পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গেই জানাই। তাৎক্ষণিক চন্দ্রঘোনা থানার উপপরিদর্শক ইস্রাফিল ফোর্স নিয়ে গেলে শিশুর বস্তাবন্দি লাশসহ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।’
চন্দ্রঘোনা থানার ওসি মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘রোববার ভোর ৪টার দিকে মৃত শিশুকে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়ার প্রস্তুতি চালায় হত্যাকারী। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় হত্যাকারীকে আটক করা হয়েছে। অংবাচিং মারমা থানায় পুলিশি হেফাজতে আছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’