প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে জিতলেন যারা

Looks like you've blocked notifications!

উপজেলা পরিষদের ভোটে প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগ মনোনীত ৫৫ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ২২ জন চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত দুজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ভোট গণনা শেষে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা এই ফলাফল ঘোষণা করেন।

আওয়ামী লীগের হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় জাহাঙ্গীর আলম, তানোরে লুৎফর হায়দার রশিদ, বাগমারায় অনীল কুমার সরকার, দুর্গাপুরে মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, পুঠিয়ায় এম হীরা বাচ্চু, চারঘাটে ফকরুল ইসলাম, মোহনপুরে আবদুস সালাম (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত) ও বাঘায় লায়েব উদ্দিন লাবলু (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত),

পঞ্চগড় সদরে আমিরুল ইসলাম, তেঁতুলিয়ায় কাজী মাহামুদুর রহমান ডাবলু, আটোয়ারীতে মো. তৌহিদুল ইসলাম ও বোদায় অধ্যাপক ফারুক আলম টবি (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত),

নীলফামারীর ডোমারে তোফায়েল আহমেদ, ডিমলায় মো. তবিবুল ইসলাম ও সৈয়দপুরে মোকসেদুল মোমিন, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে মাহবুবুজ্জামান আহমেদ ও পাটগ্রামে রুহুল আমীন বাবুল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের আমান উদ্দিন মঞ্জু, চিলমারীতে শওকত আলী বীর বিক্রম, ভুরুঙ্গামারীতে নুরুন্নবী চৌধুরী খোকন, উলিপুরে গোলাম হোসেন মন্টু ও নাগেশ্বরীতে মো. মোস্তফা জামান জয়ী হয়েছেন।

জামালপুরের ইসলামপুরে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামাল আব্দুন নাছের বাবুল। এর আগে সদরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আবুল হোসেন, মেলান্দহে ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান, মাদারগঞ্জে ওবায়দুর রহমান বেলাল ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় গিয়াসউদ্দিন পাঠান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

নেত্রকোনা সদরে অধ্যাপক তফসির উদ্দিন খান, খালিয়াজুরীতে গোলাম কিবরিয়া জব্বার, মদনে মো. হাবিবুর রহমান, কলমাকান্দায় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক তালুকদার, মোহনগঞ্জে মো. শহীদ ইকবাল (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত) ও কেন্দুয়ায় মো. নূরুল ইসলাম (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত),

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের খায়রুল হুদা চপল, তাহিরপুরে করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, দোয়ারাবাজারে আবদুর রহিম ও ছাতকে মো. ফজলুর রহমান,

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে আবুল কাশেম চৌধুরী, আজমিরীগঞ্জে মর্তুজা হাসান, চুনারুঘাটে আবদুল কাদির লস্কর ও লাখাইয়ে মুশফিউল আলম আজাদ  চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আজাদ রহমান, চৌহালীতে ফারুক হোসেন ও রায়গঞ্জে ইমরুল তালুকদার ইমন চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন। এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন কাজীপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের খলিলুর রহমান সিরাজী, সদরে রিয়াজ উদ্দিন ও উল্লাপাড়ায় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শফি।

জয়পুরহাট সদরে এস এম সোলায়মান আলী, পাঁচবিবিতে মনিরুল শহীদ মন্ডল, কালাইয়ে মিজানুর রহমান মিলন ও ক্ষেতলালে মোস্তাকিম মন্ডল,

নাটোর সদর উপজেলায় শলিফুল ইসলাম রমজান (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত), লালপুরে ইসাহাক আলী, সিংড়ায় শফিকুল ইসলাম ও বড়াইগ্রামে ডা. সিদ্দিকুর রহমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন  হবিগঞ্জ সদরে মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, নবীগঞ্জে ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম ও বাহুবলে সৈয়দ খলিলুর রহমান, সুনামগঞ্জের ধরমপাশায় মোজাম্মেল হোসেন রুকন, বিশ্বম্ভরপুরে মো. সফর উদ্দিন ও দিরাইয়ে মঞ্জুর আলম চৌধুরী, লালমনিরহাট সদরে কামরুজ্জামান সুজন ও হাতীবান্ধায় মশিউর রহমান মামুন, জামালপুরের বকশীগঞ্জে আব্দুর রউফ তালুকদার ও দেওয়ানগঞ্জে সোলাইমান হোসেন সোলাই, নেত্রকোনার বারহাট্টায় মাইনুল হক কাসেম ও দুর্গাপুরে জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে শাহ মো. আবুল কালাম বারি পাইলট, নাটোরের বাগাতিপাড়ায় অহিদুল ইসলাম গকুল ও গুরুদাসপুরে আনোয়ার হোসেন, জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে আব্দুস সালাম আকন্দ, কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী, রাজিবপুরে আকবর হোসেন হীরো ও রৌমারীতে শেখ আব্দুল্লাহ ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মনিরুজ্জামান মনি।

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়ে জয়ী

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন  হবিগঞ্জের মাধবপুরে সৈয়দ মোহাম্মদ শাহজাহান ও সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় মো. ফারুক আহমদ।

বড় ধরনের কোনো অঘটন ছাড়াই রোববার শেষ হয় উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ পর্ব। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে সারা দেশে ১২ জেলার ৭৮ উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। ব্যালট পেপার ছিনতাই, জাল ভোট প্রদানসহ নানা অভিযোগে ১৬টি উপজেলার ২৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় তিনটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত হওয়ায় এই উপজেলায় ফল ঘোষণা করা হয়নি। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি।

বিএনপি ও তাদের জোট, বামপন্থী দলগুলোসহ অনেক রাজনৈতিক দলই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এর ফলস্বরূপ, প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ২৮ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন রয়েছেন। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের নেতা।

নির্বাচন উপলক্ষে রোববার সংশ্লিষ্ট এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম ধাপে ৮৭টি উপজেলায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও ভোট হয় ৭৮টি উপজেলায়। আদালতের আদেশে তিনটি ও নির্বাচন কমিশন তিনটি উপজেলার ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে। এ ছাড়া তিনটি উপজেলার সব পদে একক প্রার্থী থাকায় সেখানে ভোটের প্রয়োজন পড়েনি।

এসব উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা এক কোটি ৪২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫০ জন। মোট ভোটকেন্দ্র পাঁচ হাজার ৮৪৭টি। চেয়ারম্যান পদে ২০৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৩৮৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৪৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।