চুয়াডাঙ্গায় নৌকার প্রার্থীসহ ২১ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গায় ৪৭ প্রার্থীর মধ্যে জীবননগর উপজেলায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু মো. আব্দুল লতিফ অমলসহ ২১ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। জেলায় ভোট পড়েছে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৮৩৭, যা মোট ভোটের শতকরা ৪৫ দশমিক ১১ ভাগ।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় জামানত বাজেয়াপ্ত হয় পাঁচজনের, জামানত রক্ষা পান সাতজন। আলমডাঙ্গায় জামানত বাজেয়াপ্ত হয় পাঁচজনের, রক্ষা পান ছয়জন। দামুড়হুদায় জামানত বাজেয়াপ্ত হয় পাঁচজনের, জামানত রক্ষা হয় আটজনের। জীবননগর উপজেলায় জামানত বাজেয়াপ্ত ছয়জনের, রক্ষা পান পাঁচজন।
সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ওয়ার্কার্স পার্টির মামুন অর রশিদ ২৬৩ ভোট ও জাকের পার্টির মো. শফিউদ্দীন ১ হাজার ৪০২ ভোট পেয়ে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক হযরত ৩ হাজার ৪৫৯ ভোট, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মামুন অর রশীদ আঙ্গুর ৭ হাজার ১৯৩ ভোট ও সুলতান মাহমুদ ২ হাজার ৩২৪ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
আলমডাঙ্গায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র আনিছুজ্জামান মল্লিক ১ হাজার ৩৫৫ ভোট ও স্বতন্ত্র সানোয়ার হোসেন লাড্ডু ৪ হাজার ২৮১ ভোট পেয়ে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুণ ৬ হাজার ৪৯৪ ভোট, আজিজুল হক ৩ হাজার ১৭১ ভোট এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোমেনা বেগম ১০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে জামানত খুইয়েছেন।
দামুড়হুদায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র আব্দুল কুদ্দুস ১ হাজার ২৮৭ ভোট, স্বতন্ত্র আবু তালেব ৫ হাজার ৫৪৮ ভোট ও জাতীয় পার্টির এহসানুল হক ১ হাজার ৫৮৭ ভোট, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল আলম ৬ হাজার ৩৩৮ ভোট ও রুহুল কুদ্দুস ৭ হাজার ৬৩৩ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্তের সম্মুখীন হয়েছেন।
জীবননগর উপজেলায় সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল ৪১৮ ভোট ও ওয়ার্কার্স পার্টির নজরুল ইসলাম ৩২২ ভোট, স্বতন্ত্র নজরুল মল্লিক ৬ হাজার ৮০৫ ভোট এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে এসএম আশরাফুজ্জামান টিপু ৪ হাজার ৫৫৩ ভোট ও সুজন মিয়া ১ হাজার ৯২১ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩৩৮টি কেন্দ্রে ৮ লাখ ৫৩ হাজার ৬ জন ভোটার রয়েছেন। এরমধ্যে ভোট পড়েছে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৮৩৭টি। এরমধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪২৩ এবং বাতিল ভোটের সংখ্যা ১০ হাজার ৪১৪।
উপজেলাভেদে ভোটসংখ্যা
সদরে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৪৪ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ২৫২টি। এর মধ্যে বৈধ ভোট ১ লাখ ২ হাজার ১০৮টি। ভোটের গড় হার ৪৫ দশমিক ২২ ভাগ।
আলমডাঙ্গায় ২ লাখ ৬৩ হাজার ২৭৬ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ১ লাখ ১ হাজার ১১৫টি। এর মধ্যে বৈধ ভোট ৯৮ হাজার ৯৪৩টি। এখানে ভোটের হার ৩৮ দশমিক ৪ ভাগ।
দামুড়হুদায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৬৩১ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ৮১ হাজার ৯৩৮টি। এর মধ্যে বৈধ ভোট ৭৯ হাজার ২২৮টি। ভোট প্রদানের গড় হার ৩৭ দশমিক ৩ ভাগ।
জীবননগরে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৫৫ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ৫৯ হাজার ৫৩২টি। এর মধ্যে বৈধ ভোট ৫৮ হাজার ১৪৫টি। ভোট প্রদানের গড় হার ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
এদিকে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জিতেছিলেন কিন্তু পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হেরেছেন জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুণ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা খাতুন ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক হযরত।
আবার ভাইস চেয়ারম্যান থেকে একধাপ এগিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন জীবননগরের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান। এখানে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি পুনরায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন।
চার উপজেলায় জিতলেন যারা
সদরে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের আসাদুল হক বিশ্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাসুদুর রহমান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাহাজাদী মিলি নির্বাচিত হয়েছেন।
আলমডাঙ্গায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র আয়ুব হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে খন্দকার সালমুন আহাম্মেদ ডন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কাজী মারজাহান নিতু নির্বাচিত হয়েছেন।
দামুড়হুদায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র আলী মুনছুর বাবু, ভাইস চেয়ারম্যান পদে শহিদুল ইসলাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাহিদা খাতুন নির্বাচিত হয়েছেন।
জীবননগরে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র হাফিজুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে আব্দুস সালাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আয়েশা সুলতানা লাকি নির্বাচিত হয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহম্মেদ জানান, নির্বাচনে যে সব ব্যক্তি প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককেই গেজেট প্রকাশের এক মাসের মধ্যে আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে। আর যে সব প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ ভোট পাননি তাঁদের জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হবে।