বাম মোর্চার রোডমার্চকে যশোর শহরে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার রোডমার্চকে যশোর শহরে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। তাদের যশোর বাইপাস দিয়ে খুলনার দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) ভাস্কর সাহা বলেন, ‘রোডমার্চে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। শহরের মধ্যে ঢুকলে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা হতে পারে আশঙ্কায় বাইপাস সড়ক ধরে রোডমার্চটি খুলনার দিকে যাবে।’
রোডমার্চে অংশ নেওয়া নেতারা জানান, বাগেরহাটের রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা বাতিল এবং সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে যাত্রা শুরু করে। রোডমার্চটি আগামী ১৮ অক্টোবর বাগেরহাটের কাটাখালী পৌঁছানোর কথা আছে। রোডমার্চটি শুক্রবার বিকেলে মানিকগঞ্জ শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে গেলে পুলিশ তাদের এলোপাতাড়ি লাঠিপেটা করে। এতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড সুধাংশু চক্রবর্তী, বহ্নি শিখা, তমাসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। বিকেল সাড়ে ৫টায় মানিকগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত গিয়ে রোডমার্চটি রাজবাড়ীর উদ্দেশে রওনা হয়। আজ সকালে রোডমার্চটি রাজবাড়ী হয়ে মাগুরায় পৌঁছায়।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রোডমার্চ মাগুরায় পৌঁছায়। পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বাম মোর্চার সমন্বয়ক সাইফুল হক, ফকরুদ্দিন আজিজসহ ১০ নেতা-কর্মী আহত হন বলে দাবি করেছেন গণসংহতি আন্দোলন কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। পরে দুপুর ১২টার দিকে রোডমার্চের গাড়িবহর মাগুরা থেকে ঝিনাইদহ হয়ে যশোরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা ২টা ৫০ মিনিটে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার রোডমার্চ যশোর শহরের প্রবেশমুখ পালবাড়ীতে গিয়ে পৌঁছায়। সেখানে আগে থেকেই যশোর পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য অবস্থান নিয়ে ছিলেন। রোডমার্চ শহরের বাইপাস সড়ক হয়ে চাঁচড়া অভিমুখে যাওয়ার পথে পুলিশ তাদের পিছু নেয়। পালবাড়ী মোড়ে অবস্থানরত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক, সহকারী পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) ভাস্কর সাহা, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার আককাস আলী প্রমুখ।
এদিকে যশোর শহরের প্রবেশমুখে পৌঁছে বাম মোর্চার সমন্বয়ক সাইফুল হক সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, মাগুরায় তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে বাম নেতা-কর্মীদের ওপর। পুলিশের সঙ্গে এই হামলায় অংশ নেয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের ক্যাডাররা। ওই হামলায় সাইফুল হক নিজেসহ মোর্চার পাঁচ নেতা-কর্মী আহত হন।
বাম মোর্চার অন্যতম নেতা জুনায়েদ সাকি অভিযোগ করেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে সরকার তাদের মুখোশ উন্মোচন করেছে।’ তিনি বলেন, ‘ঝিনাইদহ থেকে তারা মূলত পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন। পুলিশ তাঁদের অজানা গন্তব্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের উদ্দেশ্য কী আমরা জানি না।’