‘পাট গুদামে আগুন লাগার পর গার্ডরা পালিয়ে যায়’

Looks like you've blocked notifications!
ফাইল ছবি

খুলনার দৌলতপুরে এফআর জুট ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের পাট গুদামে আগুন লাগার পর সেখানে ‘রহস্যজনকভাবে’ কোনো নিরাপত্তারক্ষী ছিল না বলে দাবি করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক (ডিডি) মিজানুর রহমান।

আজ রোববার দুপুরে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই। কিন্তু সেখানে কোনো নিরাপত্তারক্ষীকে পাওয়া যায়নি। তারা নাকি পালিয়ে গিয়েছিল। বন্ধ গুদামে আগুন লাগা রহস্যজনক।’

গুদামের ওপর ঋণ দিয়েছিল সোনালী ব্যাংক। ব্যাংকটির দৌলতপুর করপোরেট শাখার উপমহাব্যবস্থাপক আবু হোসেন শেখ এ ব্যাপারে জানান, গুদামে ধোঁয়া উড়তে দেখে নিরাপত্তারক্ষীরা পাশের কার্যালয়ে গিয়ে খবর দেন।

গতকাল শনিবার দুপুর ৩টার দিকে এফআর জুট ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের পাটের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাতটি ইউনিট এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দৌলতপুরের খান ব্রাদার্সের কমপ্লেক্সে এফআর জুটের পাটগুদামের মধ্যে সাতটি কম্পাউন্ড রয়েছে। আজ রোববার দিনভর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিভানোর কাজ করেন।

এ ঘটনায় আজ খান ব্রাদার্স ও এফআর জুট ট্রেডিংয়ে পক্ষে দৌলতপুর থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এসব জিডিতে ক্ষয়ক্ষতির কোনো পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, শনিবার গভীর রাতে এবং আজ রোববার দুটি জিডি করা হয়েছে। একটি জিডি করেন এফআর জুট ট্রেডিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক বঙ্গলাল সাহা। তিনি জিডিতে পাটের পরিমাণ উল্লেখ করেননি। জিডিতে বলা হয়েছে, আগুনে পুড়ে বিপুল পরিমাণ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি গুদামে কী পরিমাণ পাট ছিল- তাও উল্লেখ করেননি। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কেও কোনোকিছু উল্লেখ করা হয়নি জিডিতে।

অন্যদিকে গুদামমালিক খান ব্রাদার্সের পক্ষে জনৈক কামাল হোসেন জিডি করেন বলে জানান দৌলতপুর থানার ওসি। তিনি জানান, ‘সেই জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভাড়া দেওয়া গুদামে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।’

আগুনের ব্যাপারে এফআর জুট ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলহাজ শরীফ ফজলুর রহমান জানান, গত বছর পাটের দাম কম ছিল। এবার যখন দাম বাড়তির দিকে তখন এই আগুনের ঘটনা ঘটল। তিনি জানান, আগুনে তাঁর প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা রপ্তানির শিডিউল করা ছিল। আগুনে পাট পুড়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণ বিমা হতে পাওয়া গেলেও ব্যবসার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে নিরূপণ করা সম্ভব নয়।

ঘটনার সময় অফিসে ছিলেন জানিয়ে শরীফ ফজলুর রহমান বলেন, পরে শারীর খারাপ হলে বাসায় চলে যাই।

দৌলতপুর সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখার কর্মকর্তা আবু হোসেন শেখ জানান, ব্যাংকের খাতাপত্রে আগুন লাগা গুদামে পাট ছিল ১৫ হাজার ৩০ বেল, যার মূল্য ১৩ কোটি চার লাখ ৩৭ টাকা। তিনি জানান, গুদাম পাহারা দিতে ফাইভ স্টার  সিকিউরিটি সার্ভিসের তিনজন দায়িত্ব পালন করছিল। গুদামকিপার ছিলেন কাজী সৈয়দ আবুল সাউদ। ঘটনার সময় গুদাম বন্ধ থাকায় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না।

গুদামটির পাট গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের বিমা করা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের আঞ্চলিক প্রধান জাহাঙ্গীর হোসেন আবেদ। তিনি জানান, এই গুদামের বিপরীতে তাদের ১৩ কোটি টাকার বিমা করা রয়েছে এককভাবে। সার্ভে রিপোর্ট হয়ে গেলেই ক্ষতিপূরণ পাবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান।