গরিব কৃষকের জমির ধান কেটে দিলেন জেলা প্রশাসক

স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে দরিদ্র প্রান্তিক কৃষকদের ধান কেটে দেওয়া কার্যক্রম শুরু করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস।
‘কৃষকরা একা নয়, আমরা আছি তাদের পাশে’ এই স্লোগান নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে জেলার জীবননগরে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে তিনি এ কার্যক্রম শুরু করেন।
কৃষকদের চরম দুঃসময়ে এভাবে ধান কাটতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় খুশি কৃষকরা। ধানের মূল্য না থাকাসহ চলতি বোরো মৌসুমে সারা দেশের মতো চুয়াডাঙ্গায়ও দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি মজুরি বেশি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার ফরহাদ আহমদ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া খাঁনকে সঙ্গে নিয়ে জীবননগর উপজেলার পেয়ারাতলা গ্রামে জেবুন নেছা নামের এক নারীর ১৫ কাঠা জমির ধান কাটতে শুরু করেন জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস। দ্রুত এ খবর উপজেলা শহরে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম ঈশা, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সারমিন আক্তার, ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খাঁন ও স্কাউটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
এ সময় জেলা প্রশাসকের দেখাদেখি তাঁরাও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ওই নারীর জমির পাকা ধান কেটে দেন।
ধানক্ষেতের মালিক জেবুন নেছা জানান, তাঁর ১৫ কাঠা জমির ধান পাকার পরও টাকার অভাবে তিনি কামলা নিয়ে ধান কাটতে পারছিলেন না। তাই মঙ্গলবার তিনি ও তাঁর ছেলে শাহ আলম ক্ষেতের ধান কাটতে শুরু করেন। এরপরই জেলা প্রশাসকসহ সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা তাঁর জমির অবশিষ্ট ধান কেটে দেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমরা কৃষকের সন্তান, কৃষকদের এই দুঃসময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেদেরও সৌভাগ্যবান মনে করছি। কৃষকরা সাময়িক শ্রমিক সংকটে পড়েছে হয়তো, সেটা কেটে যাবে।’
এখন থেকে দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে দেওয়ার উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
ধান কাটার পর জীবননগর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জেলা প্রশাসক সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন।