খুলনায় হুজি শহীদ হত্যা : চারজনকে কারাগারে
খুলনার দৌলতপুর উপজেলায় জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী ও পাটশ্রমিক ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম ওরফে হুজি শহীদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া চারজনকে আজ শনিবার বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আদালতে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে। মহানগর হাকিম ফারুক ইকবালের আদালতে এ রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
আদালত রোববার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে শুক্রবার রাতে নিহতের ছোট ভাই তৌহিদুজ্জামান ওরফে তৌহিদ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় খুলনা সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সুলতান মাহমুদ পিন্টুসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম জানান, এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে আশরাফুজ্জামান বেনু, ফারুক হোসেন, মনিরুল ইসলাম ও এনামুল হক মাসুমকে ঘটনার দিন গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার মহানগর হাকিম ফারুক ইকবালের আদালতে তাঁদের হাজির করে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। আদালত রোববার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে হুজি শহীদ হত্যা মামলায় নগরীর দেয়ানা উত্তরপাড়ার মো. টিপু, একই এলাকার মো. বেনু মিয়া, অনি গাজী, মো. এনামুল কবির মাসুম, খালিশপুরের কাশিপুর এলাকার বাসিন্দা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সুলতান মাহমুদ পিন্টু, নূরনগরের বিশ্বাসবাড়ী এলাকার মো. আমানত, দৌলতপুরের পাবলা কেশবলাল রোড এলাকার মো. মিল্টন, দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের মারুফ ওরফে গরু মারুফ, পাবলা কারিগরপাড়ার মো. আসলাম ওরফে ট্যারা আসলাম, পাবলা রিফুজিপাড়ার রিফুজি মঈন, পাবলা কারিগরপাড়ার ফারুক ওরফে কিলার ফারুক, দিঘলিয়া উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের মুন্না, ফুলতলা উপজেলার বুড়িয়ার ডাঙ্গা গ্রামের মো. এনামুল হক, কাশিপুরের শেখ সাবু, কার্ত্তিককূল এলাকার বড় শাহীন, বয়রায় রায়েরমহল এলাকার মো. বিটু, দৌলতপুর মধ্যডাঙ্গা এলাকার মো. মনিরুল, দিঘলিয়া উপজেলার ফরমাইশ খানা গ্রামের (সাহেবপাড়া) নাসিম, পাবলা তিন দোকানের মোড়ের মো. লাভলু ও দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনি মহল গ্রামের শাহিনকে আসামি করে মামলা করা হয়। এ ছাড়া এজাহারে অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো পাঁচ-সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে মামলার বাদী নিহতের ছোট ভাই তৌহিদ উল্লেখ করেন, আসামিরা এর আগে তাঁর ভাই শহীদকে হত্যার হুমকি দেয়। তাঁরা পরস্পর যোগসাজশ করেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তবে হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ এজাহারে উল্লেখ করা হয়নি।
বাদী তৌহিদ জানান, তাঁর ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডে একজন কাউন্সিলরের গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে দৌলতপুর রেল স্টেশনের অদূরে খান ব্রাদার্স নামক পাট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে কাজ সেরে নিজ প্রাইভেট কারে করে নগরীর পাবলায় নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন। প্রাইভেটকারটি নগরীর দৌলতপুরের ইসলামী ব্যাংকের কাছে পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলে এসে চারজন সশস্ত্র যুবক গাড়িটির গতিরোধ করেন। গাড়ির বাঁ-পাশের দরজায় ১১টি গুলি করেন তাঁরা। তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।