আমি বিচার চাই না : দীপনের বাবা
দুস্কৃতকারীদের হামলায় নিহত জাগৃতি প্রকাশনী সংস্থার স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেছেন, তিনি ছেলে হত্যার বিচার চান না। কারণ, বিচার চেয়ে কোনো প্রতিকার হবে না।
আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতি প্রকাশনী সংস্থার কার্যালয় থেকে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দুর্বৃত্তরা তাঁকে নির্মমভাবে কুপিয়ে কার্যালয়ের দরজা বন্ধ করে চলে যায়।
এর আগে দুপুরে রাজধানীর লালমাটিয়ার সি ব্লকে প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে ঢুকে প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুল, লেখক ও ব্লগার রণদীপম বসু ও তারেক রহিমকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা। সেখানেও দুর্বৃত্তরা আহতদের তালাবদ্ধ করে রেখে পালিয়ে যায়।
প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুল ও ফয়সাল আরেফিন দীপন উভয়ের প্রকাশনা সংস্থা থেকেই নিহত ব্লগার অভিজিত রায়ের বই প্রকাশিত হয়েছিল।
লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর কার্যালয়ে হামলার খবর শুনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক ছেলে দীপনের মোবাইল ফোনে কল করেন। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে জাগৃতি প্রকাশনী সংস্থার কার্যালয়ে ছুটে আসেন। এ সময় কার্যালয়ে দরজা বন্ধ দেখতে পান। দরজা খুলে ছেলেকে সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন জানান, রক্তাক্ত অবস্থায় দীপন তাঁর কার্যালয়ের নিজ চেয়ারে বসা ছিলেন। তাঁর ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যখন তাঁকে উদ্ধার করা হয়, ততক্ষণে সেখানে রক্ত জমাট বাঁধা অবস্থায় ছিল। মনে হয়, বেশ কিছু সময় আগেই দুর্বৃত্তরা দীপনকে কুপিয়ে রেখে গেছে।
এরপর দীপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় শোকে বিহ্বল আবুল কাশেম ফজলুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘সে (দীপন) অভিজিৎ রায়ের বই বের করেছিল এবং অভিজিৎ রায়ের বই যারা বের করেছে তাদের সকলকে আজ মেরেছে। তার মধ্যে দীপনকে আজ মেরে ফেলেছে। অন্যদের মেরে ফেলতে পারে নাই। হয়তো তাদের আশপাশে লোক ছিল, কিছু একটা।’
ছেলে হত্যার ঘটনায় বিচারের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, ‘শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। এখানে আমি বিচার চাই না। জানি, বিচার চেয়ে কোনো প্রতিকার হবে না।’
জাগৃতি প্রকাশনী সংস্থা থেকে ব্লগার অভিজিত রায়ের ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ নামের একটি বই প্রকাশিত হয়।