‘পরকীয়ার জেরে’ আইনজীবী হত্যা, মা-ছেলে গ্রেপ্তার
গাজীপুরের শিক্ষানবিশ আইনজীবী খন্দকার এনামুল হক বিপ্লবের হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহবুবুল হাসান রাব্বী (২২) ও তাঁর মা নাজমা বেগমকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ রোববার ভোরে শ্রীপুর উপজেলার ইজ্জতপুর রেলস্টেশনের কাছ থেকে প্রথমে রাব্বীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলা শহরের বারুদা এলাকার ভাড়া বাসা থেকে নাজমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাব্বী গাজীপুর জজকোর্টের সেরেস্তাদার মাসুদুর রহমান ভুঁইয়ার ছেলে। তাঁদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার সাহেব প্রতাপ গ্রামে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ (পিপিএম) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গ্রেপ্তার কলেজছাত্র রাব্বীর মা নাজমা বেগমের সঙ্গে আইনজীবী বিপ্লবের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এর জের ধরে ক্ষুব্ধ হয়ে রাব্বী ও তার ভাই রবিন ছুরিকাঘাত করে বিপ্লবকে খুন করে।’
পুলিশ জানায়, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিসও হয়। কিন্তু তাতেও সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুর শহরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় নিজ বাড়ির কাছে বিপ্লবকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। বিপ্লব গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি শহিদুজ্জামানের জুনিয়র ছিলেন। তিনি ওই এলাকার মৃত খন্দকার সামসুদ্দিনের ছেলে এবং সুপ্রিম কোর্টের সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল খন্দকার আমিনুল ইসলাম টুটুলের ছোট ভাই।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই আমিনুল ইসলাম টুটুল বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা। তিনি জানান, মামলায় রাব্বী (২২) ও তাঁর ভাই রবিনের (২০) নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট খন্দকার আমিনুল ইসলাম টুটুল জানান, এক সপ্তাহ আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবা খন্দকার মো. সামসুদ্দিন মারা যান। বাবার মৃত্যু উপলক্ষে বাসায় আসা ছোট বোনকে টাঙ্গাইলের বাসা পৌঁছে দিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় বিপ্লব বাসার সামনে পৌঁছান।
এ সময় আগে থেকে ওত পেতে থাকা দুই দুর্বৃত্ত বিপ্লবকে ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে তারা বিপ্লবকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়।
বিপ্লবের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে রাজধানী উত্তরার আধুনিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক বিপ্লবকে মৃত ঘোষণা করেন।