দুই বিচারক হত্যা : ১০ বছরেও নির্মিত হয়নি স্মৃতিস্তম্ভ

Looks like you've blocked notifications!
২০০৫ সালের এই দিনে জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ে এবং সোহেল আহম্মেদ। ফাইল ছবি

আজ ১৪ নভেম্বর, ঝালকাঠির দুই বিচারককে এদিন হত্যা করা হয়। জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২০০৫ সালের এ দিনে দুই বিচারক নিহত হন। এদিন সকাল ৯টার দিকে সরকারি বাসভবন থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসে হামলা চালায় জঙ্গিরা। urgentPhoto

এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ এবং বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ে। এ সময় মাইক্রোবাসটি বিধ্বস্ত হয়।

আহত অবস্থায় ধরা পড়ে হামলাকারী জেএমবি সুইসাইড স্কোয়ার্ডের সদস্য ইফতেখার হাসান আল মামুন। সারা দেশের মানুষ এ ঘটনায় হতবাক হয়ে যায়। এরপর জেএমবির শীর্ষ নেতারা আটক হন। 

জঙ্গিদের ঝালকাঠিতে এনে তাঁদের উপস্থিতিতে জেলা জজ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচার কাজ চলে। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহমেদ ২০০৬ সালের ২৯ মে সাতজনকে ফাঁসির আদেশ দেন। উচ্চ আদালতে সে রায় বহালের পর দেশের বিভিন্ন জেলখানায় ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ছয় শীর্ষ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়। 

এঁরা হলেন জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই, সামরিক শাখা প্রধান আতাউর রহমান সানি, উত্তরাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী আবদুল আউয়াল, দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী খালেদ সাইফুল্লাহ ও বোমা হামলাকারী ইফতেখার হাসান আল মামুন। 

অন্য সাজাপ্রাপ্ত আসাদুল ইসলাম আরিফ প্রথম থেকেই পলাতক থাকায় তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। 

জঙ্গিদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার কিছুদিন পরে ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল রাতে গুলিতে নিহত হন এ হত্যা মামলা পরিচালনাকারী ঝালকাঠির পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হায়দার হুসাইন। এ মামলায় চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি পাঁচ জেএমবি সদস্যের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবদুল হালিম এ রায় ঘোষণা করেন। 

ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন জেএমবি সদস্য আমির হোসেন, শাহাদাত হোসেন, মুরাদ হোসেন, বেল্লাল হোসেন ও সগির হোসেন। মামলার রায় ঘোষণার সময় তিনজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর দুই আসামি বেল্লাল হোসেন ও সগির হোসেন এখনো পলাতক রয়েছেন।

এদিকে দুই বিচারকের হত্যার পরে সরকার জেলা ও দায়রা জজ ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করলেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পাচ্ছেন না সহকারী জজ ও বিচারিক হাকিমরা। 

অন্যদিকে বিচারকদের হত্যাকাণ্ডের স্থানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে ঝালকাঠির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। কিন্তু সেটি এখানো হয়নি। 

এদিকে বিচারক হত্যা দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার বিকেলে ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।