লুৎফুন্নেছা হত্যা মামলার আইও পরিবর্তনের দাবি

Looks like you've blocked notifications!
নলছিটি পৌর এলাকার লুৎফুন্নেছা বেগম হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় ঝালকাঠি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহতের স্বজনরা। ছবি : এনটিভি

ঝালকাঠির নলছিটি পৌর এলাকার লুৎফুন্নেছা বেগম হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছে তাঁর পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আসামিরা তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) যোগসাজশে মামলাটিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য তারা মামলার আইও পরিবর্তন দাবি করেন। যদিও আইও এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় ঝালকাঠি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন লুৎফুন্নেছা বেগমের স্বজনরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের মেয়ে ফারজানা আক্তার পাখি। এ সময় লুৎফুন্নেছা বেগমের স্বামী মো. ফারুক হাওলাদার, ছেলে মো. রানা ও আবদুল ওয়াহেদ এবং বড় ভাই লোকমান মল্লিক উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, নলছিটি পৌর এলাকার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী রিপা আক্তারকে যারা ধর্ষণের পর হত্যা করেছে তারাই ওই মামলার সাক্ষী লুৎফুন্নেছা বেগমকে হত্যা করেছে।

‘নলছিটি পৌর এলাকার দক্ষিণ নাঙ্গুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী রিপা আক্তারকে ২০১২ সালের ১০ মার্চ রাতে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম, রুহুল আমিন, মাইনুল হোসেন, ইব্রাহিম জড়িত। তাদের সহায়তা করেন আলতাফ মল্লিক ও ডালিয়া বেগম। ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর সিআইডি আদালতে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। বর্তমানে ওই আসামিরা জামিনে মুক্ত আছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ মামলায় রিপার ফুপু লুৎফুন্নেছা বেগম সাক্ষী ছিলেন। আসামি ও তাদের স্বজনরা লুৎফুন্নেছা ও অন্যান্য সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল। কিছুদিন পরেই আদালতে রিপা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা ছিল।

তার আগেই ৫ নভেম্বর লুৎফুন্নেছা বেগমকে হত্যা করে লাশ বাড়ির পাশের ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। তাঁকেও রিপার মতোই নির্যাতন করে হত্যা করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

পাখি অভিযোগ করেন, তিন বছরের ব্যবধানে দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল এবং হত্যার ধরন একই হওয়ায় আসামিপক্ষ এখন নিজেদের বাঁচার জন্য বাদী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে তারা হত্যা মামলাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এতে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঘটনাটি তদন্তে ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলেও মন্তব্য করেন নিহতের স্বজনরা।

নিহতের স্বামী ফারুক হাওলাদার অভিযোগ করেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নলছিটি থানার উপপরিদর্শক আবুল হোসেনের সঙ্গে মামলার আসামি হাসান মল্লিক, আলতাফ মল্লিক ও সাইদুল হাওলাদারের সখ্য রয়েছে। তাই তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে তাঁকে অব্যাহতির দাবি জানাচ্ছি।’

নিহতের বড় ভাই লোকমান মল্লিকও হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন দাবি করেন।

তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবুল হোসেন বলেন, ‘ফুৎফুন্নেছা হত্যা মামলার আসামি আলতাফ মল্লিককে আমি গ্রেপ্তার করেছি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়ছে। মামলাটি অত্যন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আমি তদন্ত করছি।’

কারো দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই বলেন, প্রকৃত খুনিকে বের করেই আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।