২৬ বছর পর সিদ্ধান্ত বদল, হরতালে আদালত চলবে
হরতালে আদালতের কার্যক্রম চালানো নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী ও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা একে অপরের বিরুদ্ধে দিনভর বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মিছিল করেছে। আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছে।
এদিকে ২৬ বছর আগের সিদ্ধান্ত কিছুটা বদল করে হরতালের দিন বেলা ২টা থেকে আদালত কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি।
হরতালের কারণে চট্টগ্রাম আদালতের কার্যক্রম দুই মাস ধরে বন্ধ আছে। ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কোনো দল হরতাল আহ্বান করলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। সে অনুযায়ী কার্যক্রম বন্ধ রাখেন আইনজীবীরা। তবে গত ১ ও ২ মার্চ দুটি আদালতের বিচারক এজলাসে বসলে বিএনপ-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা বাধা দেন।
বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে আজ দুপুর ১টায় বৈঠক করে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি। আলোচনা করে সমিতি সিদ্ধান্ত নেয়, হরতাল চলাকালে বেলা ২টা থেকে আদালতের কার্যক্রম চলবে। এ সময় সমিতির সভাপতি মজিবুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক উপস্থিত ছিলেন। মুজিবুল হক আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং এনামুল হক বিএনপি সমর্থক আইনজীবী।
এর আগে সকাল থেকে আদালত ভবনের সামনে দুই পক্ষ সমাবেশ করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মিছিল ও বিক্ষোভ ছাড়াও আদালত চত্বরে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
নতুন আদালত ভবনের সামনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের সমাবেশে সাবেক আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, জেলা পিপি আবুল হাসেম, অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল বক্তব্য দেন।
একই স্থানে পাল্টা সমাবেশ করে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা। সমাবেশে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার অ্যাডভোকেট হায়দার মোহাম্মদ সোলেমান বক্তব্য দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল এনটিভিকে বলেন, ‘দেশের কোথাও হরতাল হচ্ছে না। বাংলাদেশের প্রত্যেক আদালত চলছে। আমরা আগামীকাল থেকে আদালত চালু করতে চাই। বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা যে কথাগুলো বলছেন, তা বাস্তবে নেই। কারণ হরতাল ও অবরোধ ডাকলেও দেশে তা পালিত হচ্ছে না।’
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম এনটিভিকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের আদালতের ইতিহাসে গত ২৬ বছর ধরে হরতালে কোনো সময় আদালত বসেনি। এখন আইনজীবীদের দ্বিধাবিভক্ত করতে একটি চক্র চেষ্টা করছে।’ তবে আগামীতে এ ধারা অব্যাহত রাখতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও তিনি জানান।
মহানগর সরকারি আইনজীবী (পিপি) ফখরুদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অনেক দিন ধরে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মামলা জট বেড়েছে। এতে সাধারণ আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।’