বিএনপি ছাত্রদল যুবদলের ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জালাল উদ্দিন সরকার হত্যা মামলার রায়ে ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক ফজলে এলাহী ভূঁইয়া জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।
রায় ঘোষণার সময় ছয় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি পাঁচ আসামি পলাতক।
দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন—কাপাসিয়া থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন, থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবদুল আলিম, বিএনপিকর্মী বেলায়েত হোসেন বেল্টু, আতাউর রহমান, ফরহাদ হোসেন ও জয়নাল, থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আলিম ফকির (পলাতক), কাপাসিয়া কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জুয়েল (পলাতক), যুবদল সদস্য জজ মিয়া (পলাতক), ছাত্রদল নেতা আল অমিন (পলাতক) ও মাহবুবুর রহমান রিপন (পলাতক)।
গাজীপুর জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট হারিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ২০০৩ সালের ১৭ আগস্ট আসামিরা জালাল উদ্দিন সরকারকে কাপাসিয়া উপজেলার পাবুর গ্রামের বলখেলা বাজারের পাশে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত জালাল উদ্দিন সরকারের ভাই মিলন সরকার বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। ২০০৪ সালের ২৩ জানুয়ারি ১১ জনকে অভিযুক্ত করে গাজীপুর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০০৬ সালের ১৯ জুলাই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। আদালত মোট ২২ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ দুপুর আড়াইটার দিকে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১১ আসামির প্রত্যেককে ফাঁসির দণ্ডাদেশ ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।
পিপি হারিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, সাজা পাওয়া আসামিরা কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী।
রায় ঘোষণার সময় আদালত প্রাঙ্গণে নিহত জালাল উদ্দিন সরকারের বাবা আমজাদ হোসেন, মা হালিমা বেগম, মেয়ে হৃদি ও ভাই মামলার বাদী মিলন সরকার উপস্থিত ছিলেন। মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তাঁরা এ রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন পিপি অ্যাডভোকেট হারিজ উদ্দিন আহমেদ এবং আসামিপক্ষে ছিলেন ড. অ্যাডভোকেট শহীদুজ্জামান।
এদিকে, রায় ঘোষণার পর সন্তোষ প্রকাশ করে আদালত প্রাঙ্গণে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল করে আনন্দ প্রকাশ করেন।