‘পাকিস্তান সিমলা চুক্তিকে ভঙ্গ করেছে’
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/12/14/photo-1450104141.jpg)
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যে সিমলা চুক্তি হয়, তা পাকিস্তান ভঙ্গ করেছে বলে দাবি করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
আজ সোমবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘স্বজনদের স্মৃতিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন রাশেদ খান মেনন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সিমলায় যে চুক্তি হয় তার মূল কথা ছিল নিজ নিজ দেশ চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। সে নিরীখে বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল আইন প্রণয়ন ও আদালত গঠন করে। চুক্তি অনুসারে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত ৯০ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের মধ্যে চিহ্নিত ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দায়িত্ব পাকিস্তান সরকারের ওপর অর্পিত হলেও তারা তা আজও না করে সিমলা চুক্তিকে ভঙ্গ করেছে।
বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর হওয়ার পর সিমলা চুক্তি লঙ্ঘিত হয়েছে বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তান মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। যুদ্ধাপরাধীরা কোনো অপরাধ করেনি বরং রাজনৈতিক চিন্তার প্রতিফলনে পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন— এ রকম যাঁরা বলেন তাঁদের পাকিস্তান সরকার কর্তৃক গঠিত হামিদুর রহমান কমিশনের রিপোর্ট পড়ে দেখার অনুরোধ করেন তিনি।
পর্যটনমন্ত্রী বলেন ১৯৭৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ১২টি ট্রাইবুনাল গঠিত হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে সে উদ্যোগই শুধু ভেস্তে যায়নি, পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ১২ হাজার অপরাধীকে ক্ষমা করে দেন।
মেনন বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে সাংবাদিকরাই প্রথম বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার দাবি করেছিলেন। সে সময় শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের অনুজ সাংবাদিক জহির রায়হানকে সদস্য সচিব করে এ সংক্রান্ত একটি কমিটিও গঠিত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জহির রায়হান নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় সে প্রক্রিয়া আর অগ্রসর হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশকে নেতৃত্ব ও মেধাশূন্য করে দেওয়ার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়। আজকের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে শুধু বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ নয় তাঁদের চিন্তা-চেতনাকে অনুসরণ করতে হবে।
ডিআরইউ সভাপতি জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃব্য দেন নেত্রকোনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম, শহীদ বুদ্ধিজীবী আবদুস সাত্তারের ছেলে সাইফুল আলম, শহীদ বুদ্ধিজীবী কাজী শামসুল হকের ছেলে কাজী সাইফুদ্দিন আব্বাস, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী ও ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ।