প্রচারে সরগরম বান্দরবান
পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারে সরগরম হয়ে উঠেছে বান্দরবান। প্রার্থীরা উন্নয়নের নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতীকের চেয়ে প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেজকে প্রাধান্য দিচ্ছেন সাধারণ ভোটাররা। প্রার্থীদের সঙ্গে প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীদের স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়স্বজনরাও।
রোববার আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী মো. ইসলাম বেবী (নৌকা) নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালাঘাটা, রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ডসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে। সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী অজিত কান্তি দাশ (উটপাখী) এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদপ্রার্থী উজলা তঞ্চঙ্গ্যা (কাঁচি)। এ ছাড়া আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও প্রচারে অংশ নেন।
অপরদিকে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী মোহাম্মদ জাবেদ রেজা গণসংযোগ ও সভা করেছে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বালাঘাটায়। সঙ্গে ছিলেন বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবুল খায়ের (উটপাখী) এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদপ্রার্থী খুরশিদা আকতার (পুতুল)। এ ছাড়া বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাও প্রচারে অংশ নেন।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমান বিপ্লব (লাঙ্গল) প্রচার চালিয়েছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম বালাঘাটাসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে। সঙ্গে জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শওকত জামান মিশুকসহ নেতাকর্মীরাও প্রচারে অংশ নেন।
ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ জাবেদ রেজা বলেন, ‘বিগত পাঁচটি বছর আমি পৌরবাসীর পাশে ছিলাম। আমার বিশ্বাস পৌরবাসী আগামী দিনেও আমার অসম্পন্ন কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য দ্বিতীয়বারের মতো আমাকে সুযোগ দেবেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘যে প্রত্যাশা নিয়ে আমি গতবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলাম, আমার বিশ্বাস তার ৭০ ভাগ কাজ আমি সম্পন্ন করতে পেরেছি। এরই মধ্যে আমি আরো অনেকগুলো উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছি। আমার বিশ্বাস বাকি কর্মকাণ্ডগুলো সম্পন্ন করে পৌরসভাকে একটি সম্মানজনক স্থানে নিয়ে যেতে আমি পুনরায় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. ইসলাম বেবী বলেন, ‘পৌর এলাকার প্রধান সমস্যা হচ্ছে পানির সংকট। এ ছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, জলাবদ্ধতা, পানিনিষ্কাশনে ড্রেনেজ সংস্কার এবং রাস্তাঘাটের উন্নয়নসহ অবকাঠামোগত কিছু সমস্যা আছে। সমস্যাগুলো এরই মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমি নির্বাচিত হলে আগামী এক বছরের মধ্যে সমস্যাগুলো যতটুকু সম্ভব সমাধান করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার বিশ্বাস সদিচ্ছা থাকলে এক বছরের মধ্যে পর্যটন শহর বান্দরবান পৌরসভার সমস্যাগুলোর ৯০ শতাংশ দূর করা সম্ভব। স্থানীয় নির্বাচনে প্রতীকের চেয়ে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা বেশি গুরুত্ব পায়। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীরা দুজনই মেয়র ছিলেন এবং আমি আগে দুবার কাউন্সিলর ছিলাম। এখানকার ভোটাররা আমাকে চেনে এবং জানে। আমার বিশ্বাস মেয়র পদে ভোটাররা নতুন মুখ দেখতে চায়। এ জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবে।’
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমান বিপ্লব বলেন, ‘জনগণের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়ে আমি ৮০ মাস মেয়রের দায়িত্বে ছিলাম। শত সীমাবদ্ধতা এবং প্রতিবন্ধকতার মাঝেও আমি চেষ্টা করেছি জনগণের সেবা করার। অতীতের সব ভুলত্রুটি শুধরে আমি চেষ্টা করব বান্দরবান পৌরসভাকে জনকল্যাণমূলক এবং আধুনিক একটি পর্যটন শহরে রূপান্তর করতে।’ তিনি আরো বলেন, ‘অতীতের ভুলের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমাকে ক্ষমা করে লাঙ্গল মার্কায় ভোট দিয়ে পুনরায় জনগণের সেবা করার সুযোগ দেবেন।’