সুশৃঙ্খল বাহিনীর উন্নয়নে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই : রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের সেনাবাহিনীকেও এগিয়ে নিতে হবে। যেকোনো সুশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যদের উন্নয়নে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার হরিণবাড়িয়া চরে যশোর সেনানিবাসের তত্ত্বাবধানে ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের শীতকালীন মহড়া পরিদর্শন শেষে সেনাবাহিনীর দরবার অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।
দুপুর ১২টায় এয়ার ফোর্সের একটি বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার হরিণবাড়িয়ার চরে মহড়াস্থলের অদূরে অস্থায়ী হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
দুপুর সাড়ে ১২টায় মহড়াস্থলে আসেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। সেখানে স্বাগত বক্তব্য দেন যশোর সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান। এ সময় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মো. শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল আবু এসরার, মুক্তিযোদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া। সংসদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কর্নেল (অব.) ফারুক খান, জিল্লুল হাকিম, কাজী কেরামত আলী, কামরুন্নাহার চৌধুরী লাভলী। এ ছাড়া দেশি, বিদেশি কূটনীতিক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা সামরিক মহড়া প্রত্যক্ষ করেন।
মহড়ার শুরুতেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের চৌকষ কমান্ডো সেনাদল প্যারাসুটের সাহায্যে ভূমিতে অবতরণ করে। মহড়ায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান, হেলিকপ্টার গানশিপ এবং আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন কম্ব্যাট টিমের ট্যাংক, আর্মাড পার্সোনাল ক্যারিয়ার আর্টিলারি গান, রিকয়েললেস রাইফেল ও ভারি মেশিনগান ব্যবহৃত হয়।
মহড়া শেষে সেনাবাহিনীর দরবারে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সেনাবাহিনীর উদ্দেশে বলেন, ‘সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে ব্রিগেড আক্রমণের যে মহড়া প্রদর্শন করা হলো তা সত্যিই প্রশংসনীয়। অভিযানের কৌশল দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। এই মহড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পেশাদারত্বের সাক্ষর বহন করে। আমি নিশ্চিত যে, দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় যেকোনো অশুভ শক্তিকে দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করতে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সম্পূর্ণভাবে সক্ষম। আপনারা মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যে গড়ে ওঠা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর যোগ্য উত্তরসূরী।’
বিকেল সাড়ে ৩টায় রাষ্ট্রপতি স্থানীয় গরিব ও দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে তিনি ঢাকায় ফিরেন।
গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ শীতকালীন মহড়া ৮৮ পদাতিক ব্রিগেডের ‘অনুশীলন দৃপ্ত শপথ’ নামক মহড়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এই সময়ের মাঝে কালুখালীর হরিণবাড়িয়াসহ আশপাশের গ্রামগুলোর দুস্থ ও গরিব মানুষ পেয়েছে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, শীতার্তরা পেয়েছে শীতবস্ত্র।