৪৯ ইউপির মধ্যে ৩০টিতে প্রার্থী দিতে পারবে না আ. লীগ
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে পাহাড়ের ৪৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩০টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা চাইলেও অস্ত্রের ভয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার এ কথা বলেছেন। আজ সোমবার রাঙামাটি শহরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জেলা কৃষক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
অস্ত্রবাজদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে দীপংকর তালুকদার বলেন, ‘পাহাড়ে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এখন অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছে। পার্বত্যাঞ্চলে অবৈধ অস্ত্রের কারণে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি চলছে। সাধারণ মানুষ এই অবৈধ অস্ত্রের কাছে জিম্মি। কেউ নিজেদের প্রাণভয়ে মামলা করতে পারছে না। যেসব জায়গায় অস্ত্র প্রয়োগ করা হয়, সেসব জায়গায় জেএসএস পায় ৯৮ ভাগ ভোট, আর আমরা পাই এক ভাগ ভোট। যেখানে জেএসএসের নিয়ন্ত্রণ নেই, সেখানে আওয়ামী লীগ পাহাড়ি-বাঙালি সবার ভোটে বিরাট ব্যবধানে জিতে।’
দীপংকর তালুকদার আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শুধু ভৌগোলিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক থেকে অন্যান্য অঞ্চলের থেকে আলাদা ও বৈচিত্র্যময়। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের কিছু সংখ্যক মানুষের ভেতরে সাম্প্রদায়িকতা বিরাজ করছে। সমতলে সবাই জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু এ অঞ্চলে জাতীয় রাজনীতি করতে গেলেও বাধা আসে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেন তখন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে এম এন লারমাও বাকশালে যোগ দিয়েছিলেন। পরে ১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তির সময় তারা বলেছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু এরপরও যেসব পাহাড়ি আওয়ামী লীগ করেছে, তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাদের জাতীয় রাজনীতি ছেড়ে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা। রাঙামাটি জেলা কৃষক লীগের সদস্য সচিব উদয় শংকর চাকমার সঞ্চালনায় এবং জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক জাহিদ আকতারের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল হক রেজা। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে সমীর চন্দ্র, রেজাউল করিম, উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুল হক আতিক, স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মালেক, সদস্য জাকির হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. মুছা মাতব্বর, জেলা আওয়ামী লীগের সমবায় ও কৃষিবিষয়ক সম্পাদক মো. ইউসুফ।
প্রথম অধিবেশনে সম্মেলন শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে জাহিদ আকতারকে সভাপতি, সান্তনাকে সহসভাপতি এবং উদয় শংকর চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।