বিচার নিয়ে শঙ্কায় স্বজনরা

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের চার বছর আজ বৃহস্পতিবার। কিন্তু এই চার বছরেও হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে পারেনি কোনো তদন্ত সংস্থা। আর এতদিনেও প্রিয়জনের হত্যার বিচার না পেয়ে হতাশ স্বজনরা। তাঁদের শঙ্কা, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দোষীদের বিচার আদৌ তাঁরা পাবেন কি না।
শুরুতে মামলার তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশের হাতে থাকলেও ব্যর্থতার কারণে তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব। এ ছাড়া বারবার স্বরাষ্ট্র পর্যায় থেকে আশ্বাসের বাণী শোনা গেলেও কার্যত কোনো ফলাফলই দেখা যায়নি এ বিষয়ে।
এমনকি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা গেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানালেও তারা যে আসলে কে, বিষয়টি এখনো জনসমক্ষে আসেনি।
রুনির ছোট ভাই এ হত্যা মামলার বাদী নওশের রোমান বলেন, ‘আমরা যদি এ ঘটনার পরবর্তী অনেকগুলো ঘটনা দেখি, সবকিছুতেই কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী একটা পর্যায় পর্যন্ত গিয়েছে। অন্তত তারা বের করতে পেয়েছে যে কারা এর সাথে জড়িত। কিন্তু এ ঘটনায় ন্যূনতম প্রাথমিক স্টেজেরও (ধাপের) কোনো অগ্রগতি দৃশ্যমান না। আমাদের কাছে মনে হয় যে, হয়তো এটার সাথে এমন কেউ জড়িত, যার জন্য এটা বুঝে-সুঝেই ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে।’
আর হত্যাকাণ্ডের চার বছরেও তদন্তের কোনো অগ্রগতি না থাকায় ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।
নওশের রোমান বলেন, ‘আশা ছেড়েই দিয়েছি সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার। আমাদের কাছে মনে হয়, বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার এক রকম যে প্রক্রিয়া চলছিল, তা সম্পন্ন হয়েছে।’
এখন পর্যন্ত এ-সংক্রান্ত কোনো তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য র্যাব ঘটনার আলামত যুক্তরাষ্ট্রে পাঠালেও এর কোনো প্রতিবেদন এখনো আদালতে উপস্থাপন করতে পারেননি তাঁরা।
তদন্ত সংস্থার ব্যর্থতার কারণেই মামলার কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না বলে মনে করছেন মামলাসংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবু বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। দীর্ঘদিন হয়ে গেল, তার পরও মামলার তদন্ত শেষ হচ্ছে না। আমেরিকায় ডিএনএও টেস্ট করা হয়েছে। এখনো তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ না হলে তো কোনো আলামত বা কোনো রিপোর্ট আদালতে সাবমিট হবে না। কাজেই হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। এমন অনেক মামলা আছে যে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সময় নেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে, মামলার তদন্তে কোনো অগ্রগতি আছে কি না জানতে চাইলে এ বিষয়ে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি তদন্ত সংস্থার কোনো সদস্য।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের বাসভবনে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।