শুল্ক কর্মকর্তাদের পেটাল ছাত্রলীগ, বন্দরে খালাস বন্ধ
কম মূল্যে পণ্য নিলামে রাজি না হওয়ায় যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে কাস্টমস (শুল্ক) কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। আজ বুধবার দুপুরে বেনাপোল কাস্টম হাউসে এ ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে বন্দরে পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ রয়েছে।
বিকেলে এ ঘটনায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ছয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০-৩০ জনকে আসামি করে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করে। তবে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে গণমাধ্যমে কারো নাম-পরিচয় জানায়নি।
এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থলে আসেন জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ূন কবীর, পুলিশ সুপার (এসপি) আনিসুর রহমানসহ জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা বেনাপোল কাস্টমস ভবনে শুল্ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিকেলে কাস্টমস ভবনের সামনে কালো ব্যাজ ধারণ করে মানববন্ধন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঘটনার পর থেকে বন্দর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য স্থানীয় ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল দু-তিনজন নেতাকে ফোন করলেও তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
বেনাপোল কাস্টমসের পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম জানান, কাস্টমসে নিলাম আহ্বান করা হলেই স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রভাব খাটিয়ে তা হাতিয়ে নিতে চান। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত ছিলেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
আজ দুপুর ১২টার দিকে ১০-১২ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী নিলাম নিয়ে যুগ্ম কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন এবং নিলামে কম মূল্যে পণ্য তাঁদের দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে উভয় পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যুগ্ম কমিশনারের ওপর হামলা চালান এবং তাঁকে পেটাতে থাকেন। এ সময় ডেপুটি কমিশনার নিতীশ চন্দ্র এতে বাধা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাঁর ওপরও হামলা চালান বলে জানান রাকিবুল ইসলাম।
কাস্টমস পরিদর্শক আরো জানান, এ ঘটনার পর পরই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বন্দরে সব ধরনের পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিসেশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, নিলামের পণ্য কমমূল্যে হাতিয়ে নেওয়ার জের ধরে ছাত্রলীগের নেতারা যুগ্ম কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমানের ওপর হামলা করেছে বলে তিনি শুনেছেন।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কাস্টমস হাউসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বর্তমানে বেনাপোল বন্দরে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। বন্দরের অভ্যন্তরে মালাবোঝাই ট্রাক আটকে আছে। ভিডিও ফুটেজে হামলাকারীদের শনাক্ত করে থানায় মামলা করা হয়েছে।