হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলা, বিচার শেষ হয়নি এক যুগেও

Looks like you've blocked notifications!
লেখক ও শিক্ষাবিদ হুমায়ুন আজাদ। পুরোনো ছবি

মামলার এক যুগ পার হয়ে গেলেও শেষ হয়নি লেখক ও শিক্ষাবিদ হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার বিচার। তবে আগামী জুনের আগেই এ মামলার রায় হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। 

এ বিষয়ে এ মামলায় হুমায়ুন আজাদের আইনজীবী এ বি এম বশির উদ্দিন মিয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মামলাটি ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. রুহুল আমিনের বেঞ্চে বিচারাধীন রয়েছে। আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক লুৎফর রহমানের জেরা শেষ হবে। তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা শেষ হলে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হবে। এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হবে। মামলার কার্যক্রম যেহেতু শেষের দিকে আশা করি জুনের আগেই  রায় হবে।’

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় মারাত্মক আহত হন হুমায়ুন আজাদ। পরের দিন হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির রমনা থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। ওই হামলার পর তিনি ২২ দিন ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমইচ) এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসারত ছিলেন।

ওই বছরের ১২ আগস্ট উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানি যাওয়ার পর সেখানেই মারা যান তিনি।  এরপর এটি হত্যা মামলা হিসেবে রূপ নেয়।

২০০৭ সালেরর ১৪ নভম্বের সিআইডির পরিদর্শক কাজী আবদুল মালেক জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশের (জেএমবি ) প্রধান শায়খ আবদুর রহমান,আতাউর রহমান সানি, নূর মোহাম্মাদ সাবু ওরফে শামীম, মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

২০০৭ সালের ৩০ মার্চ ঝালকাঠির দুই বিচারক হত্যা মামলায় শায়খ আবদুর রহমান ও আতাউর রহমানের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়।

সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান মামলাটির মূল তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন। তিনিই মামলাটি তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন, জেএমবির সুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন, হাফিজ মাহমুদ ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। এদের মধ্যে আসামি নুর মোহাম্মদ ওরফে সাবু পলাতক।

২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশের প্রিজনভ্যান থেকে এ মামলার দুই আসামি সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন  এবং রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহমুদকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে এদের মধ্যে রাকিব ওইদিন রাতেই ধরা পড়েন এবং পরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান।

মামলায় মোট ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সর্বশেষে তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা চলমান আছে।

আদালতে মামলাটির সাক্ষী তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমানের জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে আংশিক জেরা করেন। জেরা শেষ না হওয়ায় আগামী ১১ মার্চ সাক্ষীকে অবশিষ্ট জেরার জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়।

এ মামলার উল্লেখ্যযোগ্য সাক্ষ্য দাতারা হলেন হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির, আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গনি ও ঘটনাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি অনার্সের ছাত্র আইনজীবী এস এম শফিকুর রহমান আশিক, হুমায়ুন আজাদের স্ত্রী লতিফা, কবি মোহন রায়হান এবং কবি ও সাংবাদিক নাসির আহমেদ।