এসি ল্যান্ড লাঞ্ছিত, চেয়ারম্যানের নাম বাদ দিয়ে মামলা

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার (এসি ল্যান্ড) মো. সাঈদুজ্জামান খানের করা মামলা থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কালকিনি থানার পুলিশ এই কাজ করেছে বলে সহকারী কমিশনার এই অভিযোগ করেছেন।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মাধ্যমে উপজেলার জনসাধারণের মধ্যে ওএমএসের বরাদ্দ করা চাল বিতরণের সরকারি পত্র গত ১০ মার্চ পান এসি-ল্যান্ড। তিনি পত্রটি নথিতে উপস্থাপন করে সভা আহ্বানের মাধ্যমে ডিলারের তালিকাসহ উপস্থাপনের জন্য উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাকে নোট দেন। কিন্তু খাদ্যনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সভা না ডেকে ওই দিনই ফাইল অনুমোদন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এতে এসি ল্যান্ড অপারগতা প্রকাশ করেন।
এই প্রেক্ষাপটে কালকিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান শাহিন মুঠোফোনে এসি ল্যান্ডকে ওএমএসের ফাইলে স্বাক্ষর করতে বলেন। এসি-ল্যান্ড তাতে অস্বীকৃতি জানান। এর প্রায় ১৫ মিনিট পর তৌফিকুজ্জামান এসি ল্যান্ডের কার্যালয়ে যান। ফাইলে স্বাক্ষর না দিলে তাঁকে (এসি ল্যান্ড) বিপদে পড়তে হবে বলে হুমকি দেন। এরপরও এসি ল্যান্ড সভা না করে ওই ফাইলে সই না করার ব্যাপারে অনড় থাকেন।
এসি ল্যান্ড সাঈদুজ্জামান বলেন, ‘স্বাক্ষর দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে আমার কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর দুই ব্যক্তি কক্ষে ঢুকে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।’
এ ঘটনায় এসি ল্যান্ড সোমবার রাতেই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তৌফিকুজ্জামান শাহীন, উপজেলা যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ আলম ও যুবলীগের কর্মী বাচ্চু হাওলাদারের বিরুদ্ধে কালকিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু পরে পুলিশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নাম বাদ দিয়ে মামলাটি নেয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এসি ল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, সেটা এখন মিটমাট হওয়ার পথে।’
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সোমবার রাতে এসি ল্যান্ড বাদী হয়ে শাহ আলম সরদার ও বাচ্চু হাওলাদারকে আসামি করে কিল-ঘুষি মারার অভিযোগে মামলা করেন। দুই আসামিই পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা চেয়ারম্যানকে আসামি না করার ব্যাপারে ওসি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ওই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে লাঞ্ছিতের অভিযোগ আনা হয়নি।
তবে এসি ল্যান্ড বলেন, ‘আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করেই থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে দুজনের বিরুদ্ধে।’