ইউপি নির্বাচন

ভৈরবে আ. লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত, বিদ্রোহী ৪ বর্তমান চেয়ারম্যান

Looks like you've blocked notifications!
ভৈরবের সাত ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। ছবি : এনটিভি

আগামী ৭ মে হতে যাওয়া চতুর্থ দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভৈরব উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে।

ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম বাকী বিল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা কমিটির প্রতিনিধিদের অংশ গ্রহণে এই প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে এনটিভি অনলাইনের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় আওয়ামী লীগদলীয় বর্তমান চার চেয়ারম্যান বিদ্রোহী পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সংকল্পের কথা জানিয়েছেন।

দলীয় মনোনয়নে নৌকা নিয়ে নির্বাচনে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদে আবু বকর ছিদ্দিক, আগানগর ইউনিয়ন পরিষদে মোমতাজ উদ্দিন, কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদে মো. ফারুক মিয়া, গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ফরিদ উদ্দিন খান, শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদে সফিকুল ইসলাম, শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদে সার্জেন্ট (অব.) মো. তাহের এবং শিমুলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে যুবায়ের আলম দানিছ। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটি প্রদত্ত নীতিমালা মেনে ভৈরবে সাত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সমন্বয়ে গঠিত ৬৫ জন ডেলিগেটের প্রত্যক্ষ ভোটে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। পরে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে গঠিত ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটির স্বাক্ষরের মাধ্যমে সেটি কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

তবে প্রতিটি ইউনিয়ন কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের প্রভাব থাকায় এই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকরাই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনীত হয়েছেন বলে অভিযোগ অন্য প্রার্থীদের। এ ছাড়া কোথাও কোথাও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা মিলে তাদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের দিয়ে পকেট কমিটি গঠন করে নিজেরাই নির্বাচিত হওয়ারও অভিযোগ করেন তাঁরা। কোথাও বা ডেলিগেটদের অর্থের বিনিময়ে নিজেদের পক্ষে টানার অভিযোগ করেছেন বিদ্রোহীরা। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া উপজেলার আগানগর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ, শিমূলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের মো. বাবুল মিয়া, গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কাউছার আহমেদ ভূঁইয়া ও কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদের ফজলুল কবির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

ভৈরব উপজেলার সাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সাথে ঘনিষ্টভাবে জড়িত, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম বাকী বিল্লাহ দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে হেরে যাওয়া প্রার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী গঠনতন্ত্রকে পুরোপুরি অনুসরণ করে বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয়েছে। যারা এসব অভিযোগ করছে তারা প্রার্থী হিসেবে মনোনীত না হওয়ার ক্ষোভ থেকে মিথ্যাচার করছে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা অবস্থান নেবে, কেন্দ্র নির্দেশিত পথে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভৈরব উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাযায়, ২৮ মার্চ  ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী চতুর্থ দফা নির্বাচনের অংশ হিসেবে ভৈরব উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন থেকে শুরু হওয়া মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ তারিখ ৭ এপ্রিল। জমাকৃত মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১০ ও ১১ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৮ এপ্রিল। আর ভোট গ্রহণ করা হবে ৭ মে শনিবার।

এই নির্বাচনে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের এক লাখ ২০ হাজার ৬৬৭জন ভোটার ৭০টি কেন্দ্রের ৩৬৮টি ভোট কক্ষে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে ৬২ হাজার ৫১১জন পুরুর আর ৫৮ হাজার ১৫৬জন নারী ভোটার। অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে বলে ভৈরব উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন।