যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের বিরুদ্ধে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধর করে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার সকালে আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় মারধরের শিকার আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মলয় কুমার সাহা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডির নম্বর ৬৬।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়, শনিবার সকাল সাড়ে ৬টায় সিরাজগঞ্জ থেকে উপমন্ত্রী জয় তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-১০৮৩) নিয়ে ঢাকা আসার পথে আশুলিয়ায় দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনায় গাড়িটি রাস্তার মাঝের আইল্যান্ডের ওপর উঠে পড়ে।

এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আশুলিয়া থানার এসআই মলয় কুমার সাহা এগিয়ে গেলে তাঁকে উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন জয়।

এ সময় উপমন্ত্রী জয় পুলিশের এসআইকে বলেন, ‘তুই কেন আমাকে নিরাপত্তা দিতে আসছিস? আমি কি তোর কাছে নিরাপত্তা চাইছি। তুই কি আমার নিরাপত্তা দিবি? তুই কয়টা গুলি করতে পারিস, আর আমি কয়টা গুলি করতে পারি তুই দেখবি।’

তারপরও পুলিশ কর্মকর্তা অনুরোধ করে তাঁর দায়িত্ব পালনের কথা জানালে উপমন্ত্রী উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘এতে তোর ক্ষতি তো হবেই।’ এ ছাড়া চাকরিও খেয়ে ফেলবেন বলে হুমকি দেওয়া হয় বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।

জিডিতে আরো উল্লেখ করা হয়, উপমন্ত্রী এ সময় দৌড়ে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা দূরপাল্লার খালেক এন্টারপ্রাইজের একটি বাসে উঠে পড়েন।

বাসটি কিছুদূর এগোনোর পর এসআই মন্ত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে বাসে উঠতে গেলে মন্ত্রী উত্তেজিত হয়ে তাঁকে মারধর করেন এবং লাথি মেরে বাস থেকে ফেলে দেন। এ সময় পুলিশের ওই কর্মকর্তা আঘাত পান। পরে উপমন্ত্রী গাবতলী পৌঁছে বাস থেকে থেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে মিরপুর মাজার রোডের দিকে চলে যান।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করেন। এসআইকে মারধরের ব্যাপারে থানার জিডির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে কোনো উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে মন্তব্য করতেও রাজি হননি তিনি।

আর মুঠোফোনে এসআই মলয় সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করার জন্য অনুরোধ জানান। তবে ঘটনার পর আজ বিকেলে এসআই মলয় কুমার সাহা আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন বলে জানান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। একবার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) সাইফুল ফোন ধরে জানান, উপমন্ত্রী বাইরে আছেন। তাঁকে এই মুহূর্তে ফোন দেওয়া যাবে না।

অথচ তখন ফোনের স্পিকারে উপমন্ত্রীর কণ্ঠ শোনা যায়।