২০ দলের বিবৃতি, ‘মানুষের কল্যাণে’ সংলাপের আশা

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লা বুলু। ফাইল ছবি

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট অভিযোগ করেছে, ‘ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ গণ-আন্দোলন স্তব্ধ করতে নিজেদের দলীয় লোকদের দিয়ে সাজানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে সারা দেশে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের হত্যা, গুম, অপহরণ ও নির্যাতন নিপীড়নের মহোৎসবে মেতে উঠেছে।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় জোটটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করা হয়। এতে বলা হয়, ‘২০-দলীয় জোট আশা করে, সরকার দেশের স্বার্থে ও মানুষের কল্যাণার্থে সংলাপের মাধ্যমে বর্তমান সংকটের সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে এগিয়ে আসবে।’ 

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লা বুলুর সই করা বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘সজ্জন রাজনীতিবিদ ও বিএনপির অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আজ থেকে ১৩ দিন আগে অপহরণ করে নিখোঁজ রাখা হয়েছে। সালাহ উদ্দিন আহমেদের পরিবার, দেশের সুশীলসমাজ, আপামর জনসাধারণ এবং দল ও জোটের শত আকুতিতেও সরকার এখনো পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান দিচ্ছে না। এই ধরনের ধারাবাহিক মর্মন্তুদ ও হৃদয়বিদারক ঘটনায় গোটা জাতি স্তম্ভিত, হতবাক হয়ে পড়েছে।’ 

বুলু বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হাতছাড়া না করতে এখন রাষ্ট্রীয় শক্তির অপপ্রয়োগের মরণখেলায় মেতে উঠেছে। শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার নামে দেশব্যাপী বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর দমন নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে অবৈধ সরকার এখন গদি রক্ষার জন্য হিটলার-মুসোলিনীর কঠোরতাকেও হার মানিয়েছে। দেশব্যাপী ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের মধ্য দিয়ে হিটলার-মুসোলিনীর গুপ্ত বাহিনীর আদলে দেশের ঐতিহ্যবাহী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে দেশকে চরম নৈরাজ্যকর অবস্থার মধ্যে নিপতিত করেছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাড়ির ভেতরে কিংবা বাইরে কোথাও কোনো নাগরিকের জীবন-জীবিকা এখন শঙ্কামুক্ত নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিরোধীদলীয় কোনো নেতা-কর্মীকে বেআইনিভাবে ধরতে গিয়ে, তাঁকে না পেয়ে পরিবারের নিরপরাধ সদস্যকে আটক ও তাঁদের সঙ্গে অশালীন আচরণ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনে হয়, স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও আমরা এক মগের মুল্লুকে বসবাস করছি। দেশের বিভিন্ন জেলায় যৌথ বাহিনীর নামে বিশেষ বাহিনী বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের আটক করার পর তাদের মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে রাস্তার ধারে, খালে-বিলে, ডোবা-নালায়। কোনো কোনো লাশের পরিচয়ও মিলছে না।’ 

‘বর্তমান স্বৈরশাসক দেশে গুম, খুন, গুপ্তহত্যা ও অপহরণের যে ভয়াল সংস্কৃতি চালু করেছে তা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার কাছেও প্রমাণিত। ধারাবাহিক এসব নারকীয় ঘটনায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রতিনিয়ত গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহৃত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রদত্ত বিবৃতি আন্তর্জাতিক মহলসহ দেশের ১৬ কোটি মানুষের সেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠারই প্রতিধ্বনি।’ উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।