কাল হরতাল নেই, বিক্ষোভ মিছিল করবে ২০ দল

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু। ফাইল ছবি

আগামীকাল বুধবার হরতাল নেই। গত শনিবার ২০ দলের ডাকা হরতাল শেষ হবে কাল সকাল ৬টায়। এরপর আর হরতাল বাড়ানোর ঘোষণা দেয়নি বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটটি।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আগামীকাল বুধবার অবরোধের পাশাপাশি সারা দেশে বিক্ষোভ-মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।  

গত ৬ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। সেই সঙ্গে শুক্র ও শনিবার বাদ দিয়ে চলছিল হরতাল।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলুর সই করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিএনপির গুমকৃত যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ সারা দেশে ২০ দলীয় জোটের গুম করা নেতা-কর্মীদের তাদের পরিবারের কাছে সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া এবং সারা দেশে গুম, খুন, বন্দুকযুদ্ধের নামে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিত হত্যা, গণগ্রেপ্তার ও যৌথবাহিনীর নামে বিশেষ বাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে চলমান অবরোধের পাশাপাশি আগামীকাল ২৫ মার্চ বুধবার দেশব্যাপী জেলা, থানা, পৌরসভা ও সব মহানগরের থানায় থানায় ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।’

‘শান্তিপূর্ণভাবে’ এই বিক্ষোভ-মিছিল পালন করতে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে অনুরোধ করা হয় বিবৃতিতে।
 
এর আগে গত ২২ মার্চ রোববার ভোর ৬টা থেকে ২৫ মার্চ বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত অবরোধের পাশাপাশি ৭২ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছিল ২০ দল।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘দেশ থেকে সামাজিক ন্যায়বিচার তিরোধানের ফলেই মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন আজ ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ক্রসফায়ারের মাধ্যমে দেশব্যাপী ধারাবাহিক গণহত্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণের পর অস্বীকার, গুম, গণগ্রেপ্তার, মামলা-হামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘণ এখন বাংলাদেশে যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।’

“নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, বিচার বিভাগ ও রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগকে সরকারের অবৈধ আদেশ পালনের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে’ অভিযোগ করে বিবৃতিতে ২০ দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘প্রশাসনে নিরপেক্ষ লোকদের বসানো হচ্ছে ‘ওএসডি’ নামক অপমানজনক ও কর্মহীন পদে। ফলে রাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে পরিণত হচ্ছে অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের অভয়ারণ্যে। এই ধরনের অপশাসনে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হতে আর দেরি নেই।”

প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষমূলক অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে গণদাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে ২০ দলীয় জোট আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। সেখানে আরো বলা হয়, ‘বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম চলবে এবং অচিরেই দেশবাসীর আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে এবং সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করতে আন্দোলনের নতুন রূপরেখা ও কৌশল প্রত্যক্ষ করবে শাসকগোষ্ঠী। দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ জাতীয় নির্বাচন চায়। সমগ্র জাতি আজ সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রামে লিপ্ত। জনগণ ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের বিজয় পতাকা উড়াবেই ইনশাআল্লাহ।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের প্রসঙ্গ টেনে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ বিষয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। সারা দেশ থেকে এভাবে বিরোধীদলীয় শত শত নেতা-কর্মীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ধরে নিয়ে গিয়ে গায়েব করার পাশাপাশি দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ও জাতীয় নেতাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাতের অন্ধকারে আটক করার পর এখন পর্যন্ত তার হদিস না পাওয়ার ঘটনায় গোটা জাতিকে শিহরিত ও ভাবিয়ে তুলেছে। ২০ দলীয় জোট অবিলম্বে সালাহ উদ্দিন আহমেদের নিখোঁজ নাটকের অবসান ঘটানোর জন্য সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।’

এ ছাড়া বিবৃতিতে আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।