জ্বালানি তেল নেওয়া বন্ধ, বাজারে সংকট

Looks like you've blocked notifications!
পরিবেশকরা জ্বালানি তেল না নেওয়ায় ভৈরবের পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তেল ডিপোর সামনে অলস দাঁড়িয়ে আছে ট্যাংকলরিগুলো। ছবি : এনটিভি

কমতে পারে জ্বালানি তেলের দাম। সরকারের উচ্চ পর্যায়সহ বিভিন্ন পর্যায়ে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এ কারণে ভৈরবের পদ্মা, মেঘনাও যমুনা এ তিনটি তেল কোম্পানির ডিপো থেকে জ্বালানি তেল নিচ্ছেন না কোনো পরিবেশক। পরিবেশকদের আশঙ্কা, এখন তেল নিলে দাম কমে গেলে লোকসান গুনতে হবে।

আর এ কারণে ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আর এই কৃত্রিম সংকটের বেড়াজালে পড়ে ভোক্তারা এক শ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় দ্বিগুণ মূল্যে তেল কিনতে বাধ্য হচ্ছে।

বিষয়টি স্বীকার করে ভৈরব জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, এই সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ অতি শিগগিরই জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসের সরকারি ঘোষণা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ভৈরবের পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তেল ডিপোতে প্রায় ৫০ লাখ লিটার তেল মজুদ আছে। এই তিনটি ডিপো থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ লিটার জ্বালানি তেল বিক্রি হলেও গত কয়েকদিন ধরে দুই-তিন লাখ লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে।

মেঘনা অয়েল কোম্পানির ডিপোর সুপারিনটেনডেন্ট অহিদুল হাসান এনটিভি অনলাইনকে জানান, তাঁর ডিপোতে ২৫ লাখ লিটার জ্বালানি তেল মজুদ আছে। দাম কমতে পারে এ ভয়ে স্থানীয় পরিবেশকরা চাহিদা অনুযায়ী তেল উত্তোলন করছেন না।

পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিপো সুপারিনটেনডেন্ট নাজমুল ইসলাম জানান, আগে যেখানে প্রতিদিন তিন থেকে চার লাখ লিটার তেল বিক্রি হতো তা এখন কমে গিয়ে এক লাখ লিটারে নেমে এসেছে।

এদিকে বাজারে তেলের সরবরাহ না থাকায় এক শ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ী প্রতি লিটার ৬৫ টাকা দরের ডিজেল তেল বর্তমানে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভৈরব বাজারের মেঘনা নদীঘাটের মাঝি সাইজ উদ্দিন বলেন, ‘বাজারে সকাল থেকে ঘুরে পাঁচ লিটার জ্বালানি তেল পাইনি। পরে গ্রাম থেকে ১০০ টাকা লিটার দরে তেল কিনে এনেছি।’

রায়পুরা উপজেলা থেকে আসা মজলু মিয়া বলেন, ‘গ্রামে তেল না পেয়ে ভৈরব বাজারে এসেছিলাম, কিন্তু তেল পেলাম না।’

ভৈরবের আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া গ্রামের কৃষক রফিক মিয়া বলেন, ‘গ্রামে ডিজেল না পেয়ে বাজারে এসেছিলাম নিতে কিন্তু তেলের দোকানগুলো বন্ধ। পরে গোপনে একটি দোকান থেকে ১০০ টাকা লিটার দরে তেল কিনতে বাধ্য হলাম।’

কয়েকদিন ধরে ভৈরব বাজারে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দেওয়ার কথা স্বীকার করে জ্বালানি তেল পরিবেশক মো. কাঞ্চন মিয়া বলেন, ‘ভৈরবের তিনটি ডিপোর অন্তর্ভুক্ত ৩০ জন পরিবেশকের কেউই তাদের জন্য বরাদ্দ করা তেলের সরবরাহ নিচ্ছে না। হঠাৎ দাম কমে গেলে মজুদ করা তেলে লোকসান গোনার আশঙ্কায় কেউই ঝুঁকি নিতে সাহস করছে না। এতে শুধু যে ভৈরবে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিয়েছে তা নয়, এই তিন ডিপোর আওতাভুক্ত আটটি জেলায় এই সংকট দেখা দিয়েছে।’