নির্বাচনী সহিংসতায় যুবক নিহতের পর মাদারীপুরে সংঘর্ষ, লুটপাট
মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ জুয়েল মল্লিক (৩০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার পর এলাকায় সংঘর্ষ ও বাড়িঘরে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুয়েল ঢাকায় মারা যান। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান কুদ্দুস মল্লিকের ভাতিজা ও সোনা মল্লিকের ছেলে। গত শুক্রবার কুদ্দুস মল্লিক ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সোহরাব হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা গুলিবিদ্ধ হন জুয়েল।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে পুলিশ আটক করেছে। তবে ঘটনার সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চেয়ারম্যান কুদ্দুস মল্লিকের সমর্থকরা। জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকও পুলিশকে দায়ী করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিকে শনিবার বিকালে জুয়েলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আবারও দুই পক্ষের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় মস্তফাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর সাধারণ সদস্য শওকত হোসেনসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আরো ১০ জন আহত হয়েছে। দফায় দফায় চলছে হামলা ও সংঘর্ষ। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে এলাকার সাধারণ মানুষ। দ্বিতীয় দফার সংঘর্ষের সময় শতাধিক বাড়িতে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
গত ৩১ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নে নির্বাচন হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী কুদ্দুস মল্লিক বিদ্রোহী প্রার্থী সোহরাব হোসেন খানকে ৩৫০ ভোটে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিদ্রোহী প্রার্থী সোহরাব খান অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাল ভোটের মাধ্যমে বিজয়ী হয়েছেন। এর জের ধরেই শুক্রবার দুপুরে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। এ সময় সাতজন গুলিবিদ্ধসহ ৩০ জন আহত হয়।
কুদ্দুস মল্লিক অভিযোগ করেন, পুলিশের উপস্থিতিতে পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী সন্ত্রাসীদের নিয়ে দেশি ও বিদেশি অস্ত্রশস্ত্রসহ হামলা চালায়। এ সময় নৌকা সমর্থকদের অন্তত ৩০টি বাড়িঘর ও দোকানে হামলা চালানো হয়। ঘরের মূল্যবান সম্পদ লুট, ভাঙচুর এমনকি ঘরের খাদ্যশস্যও লুট করা হয়। হামলার শিকার হয় নারী-শিশুরাও।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে বলেন, পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদ জানান, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। আমরা নিরপেক্ষভাবেই দায়িত্ব পালন করছি।’
মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি সার্কেল) মনিরুজ্জামান ফকির জানান, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এম. আর. মুর্তজা, মাদারীপুর