ঠিকাদারদের বের করে দিয়ে জানানো হলো লটারি শেষ!

Looks like you've blocked notifications!

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। কাজটি কে পাবে এ জন্য সব ঠিকাদারের উপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কক্ষে লটারি হওয়ার কথা।

কিন্তু সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ ইউএনওর কক্ষ থেকে ঠিকাদারদের বের করে দেন। পরে ইউএনও জানান, লটারি শেষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সরিষাবাড়ীর ইউএনওর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

একাধিক ঠিকাদার জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সাতটি প্রকল্পের মাধ্যমে সরিষাবাড়ীর তিন ইউনিয়নের বিভিন্ন খালের ওপর সাতটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য এক কোটি ৯২ লাখ ৭০ হাজার ৫৮৮ টাকা ব্যয় ধরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এসব কাজের দরপত্র বিক্রির শেষ তারিখ ছিল ৫ এপ্রিল এবং দরপত্র গ্রহণের শেষ তারিখ ছিল ৬ এপ্রিল। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে ৫০২টি দরপত্র কিনে জমা দেন ঠিকাদাররা। এরপর একাধিকবার বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে দরপত্র লটারির তারিখ পেছানোর পর গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ইউএনও কার্যালয়ে দরপত্রের লটারি করার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। যথাসময়ে ঠিকাদাররা ইউএনও ফ্লোরা বিলকিস জাহানের কক্ষে উপস্থিত হন। এ সময় সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ইউএনওর কক্ষে প্রবেশ করে উপস্থিত সব ঠিকাদারকে মিটিং করার কথা বলে ওই কক্ষ থেকে বের করে দেন। এর কিছুক্ষণ পর দরপত্র আহ্বানকারী কর্তৃপক্ষ বাইরে অবস্থানকারী ঠিকাদারদের জানিয়ে দেয় যে দরপত্রের লটারি হয়ে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন, অন্য ঠিকাদারদের বের করে দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদের নিজস্ব লোকের সীমান্ত ট্রেডার্সের নামে দুটি, সাহা এন্টারপ্রাইজ, শাকিল এন্টারপ্রাইজ, লোকনাথ এন্টারপ্রাইজ, এস আর এন্টারপ্রাইজ ও নাহীন এন্টারপ্রাইজের নামে একটি করে দরপত্র বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এতে উপস্থিত ঠিকাদারদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।

সরিষাবাড়ীর ইউএনও ফ্লোরা বিলকিস জাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সব নিয়মনীতি মেনেই সব ঠিকাদারের উপস্থিতিতে সুষ্ঠুভাবে দরপত্র লটারি করা হয়েছে এবং বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল হামিদের এবং সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন রিসিভ করেননি।