পুণ্যস্নানে পদদলিত হয়ে নিহত ১০, আহত অর্ধশতাধিক

Looks like you've blocked notifications!
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে মহাষ্টমীতে পুণ্যস্নানে আজ শুক্রবার সকালে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হন। স্বজনকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক নারী। ছবি : ফোকাস বাংলা

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে মহাষ্টমীতে পুণ্যস্নানে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সাতজন নারী। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি মানুষ। 

আজ শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন নোয়াখালীর ভানুমতি, মানিকগঞ্জের নিত্য গোপাল দাস, নিতাই দাস ও মালতী দাস; কুমিল্লার কানন সাহা ও রণজিৎ কুমার; ধানমণ্ডির ভবপতি, রাজধানীর লালবাগের রাখী সাহা; গোপালগঞ্জ জেলার নকুল কুণ্ড ও মাদারীপুরের খোকন সাহা। 

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মোতালেব হোসেন জানান, সকালে পুণ্যার্থীরা একটি বেইলি সেতু ধরে হাঁটছিলেন। এ সময় ধাক্কায় কয়েকজন সেতুর নিচে পড়ে যান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁদের গায়ের ওপর পড়ে যান আরো কিছু লোক। এর পর স্রোতের মতো পড়ে যাওয়া লোকজনের ওপর দিয়ে লোকজন চলতে থাকে। এতে সাত নারীসহ ১০ জন পদদলিত হয়ে নিহত হন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ চল্লিশোর্ধ্ব। 

এরই মধ্যে ওই এলাকায় হাজির হয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. আনিছুর রহমান মিয়া, পুলিশ সুপার (এসপি) খন্দকার মুহিত উদ্দিন। ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান।

পদদলিত হয়ে পুণ্যার্থীর মৃত্যুতে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। পুণ্যার্থীদের অভিযোগ, এ দুর্ঘটনার জন্য অব্যবস্থাপনাই দায়ী। 

আজ শুক্রবার ভোর ৫টা ৪৮ মিনিটে লাঙ্গলবন্দে পুণ্যস্নান শুরু হয়। এ স্নান শেষ হবে আগামীকাল শনিবার সকাল ৬টা ৫৯ মিনিটে। ব্রহ্মপুত্র নদের তিন কিলোমিটারজুড়ে ১৫টি ঘাটে এ স্নান হয়। এখানে নিরাপত্তার স্বার্থে ২০টি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা, ১০টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার রাখা হয়েছে।

হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, বাবার আদেশে রাজা জমদগ্নির স্ত্রী রেনুকাকে তাঁর ছেলে পরশুরাম কুঠার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। মাতৃহত্যার পাপে পরশুরামের হাতে কুঠার লেগে থাকে। অনেক চেষ্টা-তদবিরের পর হিমালয়ের এক সরোবরে স্নান করার পর পরশুরামের হাত থেকে কুঠার খসে পড়ে।

সেই সরোবরের জলকেই মহাপবিত্র মনে করেন পরশুরাম। সেই জল জনকল্যাণে ব্যবহারের জন্য হিমালয়ের সরোবর থেকে লাঙল টেনে সমতলভূমিতে নিয়ে আসেন তিনি। একপর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে যেখানে লাঙল থামে, সেই জায়গার নামকরণ করা হয় লাঙ্গলবন্দ। প্রতিবছর মহাষ্টমীর তিথিতে এই লাঙ্গলবন্দে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়।