খোলা আকাশের নিচে শিশুদের পাঠদান
সিরাজগঞ্জের তাড়াশের শরীফাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের সংকট। বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে চলছে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এতে প্রচণ্ড গরমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
বর্ষাকালে ঝড়-বৃষ্টির সময় স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। আর বৈশাখের খরতাপে ক্লাস করাতে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের শরীফাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৯৪ সালে তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও একটি অফিসকক্ষ নির্মাণ করা হয়। আশপাশে কোনো বিদ্যালয় না থাকায় এতে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও অনেক।
বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ২৫ জন, প্রথম শ্রেণির ৪০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির ২৮ জন, তৃতীয় শ্রেণির ২২ জন, চতুর্থ শ্রেণির ১৬ জন এবং পঞ্চম শ্রেণির ১৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন চারজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সামনে একটি গাছের নিচে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন এক শিক্ষিকা। আর স্কুলের তিনটি কক্ষে পড়া নিচ্ছেন অন্য শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টির জায়গা রয়েছে অনেক। শুধু শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দুই শিফটে বিভক্ত করে ক্লাস করাতে হয়। প্রথম শিফটে শিশু শ্রেণি ও প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কক্ষে জায়গা না হওয়ায় বাইরের গাছতলায় খোলা আকাশের নিচে বাধ্য হয়ে ক্লাস করাতে হয়।
রফিকুল ইসলাম আরো বলেন, তাড়াশ উপজেলায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের মধ্যে শরীফাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ালেখা ও পাশের হার তুলনামূলক হারে বেশি রয়েছে। এখন দরকার শুধু একটি ভবন নির্মাণের।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট সাবেদ আলী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। অনেকবার অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। তাই বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) মাহমুদুর রহমান বলেন, নতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর বেশির ভাগ শ্রেণিকক্ষ তিনটি করে। এ জন্যই সব শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। তবে যেসব বিদ্যালয়ের অবস্থা খুবই খারাপ, সেগুলোর হিসাব করে চাহিদা দেওয়া হয়েছে।