ধানের নিম্নমূল্যে বিপাকে কৃষকরা
ধানের নিম্নমূল্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কিশোরগঞ্জের বোরো চাষিরা। বছরের একটি মাত্র ফসলের উৎপাদন খরচই উঠবে না বলে অভিযোগ কৃষকদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, চলতি বছরের মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নষ্ট হয় জেলার প্রায় ১২ হাজার একর জমির আধা-পাকা বোরো ধান। প্রধান তিনটি হাওর উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামেই বেশি ক্ষতি হয়।
ক্ষতি থেকে বেঁচে যাওয়া পাকা ধানের যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তাতে হতাশা বাড়ছে কৃষকদের।
ইটনা উপজেলার শিমুলবাক গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বলেন, ‘সার, বীজ, সেচ, শ্রমিকের মজুরি সব মিলিয়ে বোরো চাষে আমাদের যে খরচ হয়েছে তাও পাওয়া যাচ্ছে না। এতে আগামীতে ধান চাষ করা নিয়ে সংশয়ে আছি।’
আরেক চাষি কেনু মিয়া বলেন, ‘বর্তমান বাজরে ধানের যে দাম তাতে খরচই উঠবে না।’
কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকার বোরো ধান বেচা-কেনার অন্যতম প্রধান হাট হচ্ছে করিমগঞ্জ উপজেলার চামটা বন্দর। এখানের মোকাম মালিকরা প্রতিমণ ধান কিনছেন ৫০০ থেকে ৫৩০ টাকা দরে।
কৃষকদের ভাষ্য, এক একর জমিতে আনুমানিক ৬০ মণ ধান উৎপাদিত হয়। বর্তমান বাজার দরে তা বিক্রি হচ্ছে ৩০ হাজার টাকার কিছু বেশি।
চামটা বন্দরের মোকাম-মালিক আবদুল হক জানান, বিভিন্ন জেলার চাতাল মালিকরা বেশি দামে ধান না কেনায় তাঁরাও বেশি দিতে পারছেন না।
কৃষকদের হিসাবে, ধানের বীজ থেকে শুরু করে সার, সেচ, কাটা, মাড়াই সব মিলিয়ে এক মণ ধান উৎপাদনে খরচ পড়ে ৬০০ টাকার কম-বেশি। এ হিসাবে ৬০ মণ ধান উৎপাদনে খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে একরপ্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, যদি নদ-নদীর নাব্যতা বাড়ানো ও বাঁধ দেওয়া যেত তাহলে ফসল রক্ষা পেত। গভীর নলকূপের সেচ কম লাগলে ফসল উৎপাদন ব্যয় অনেক কম হতো। এতে কৃষকরা লাভবান হতেন।