সবই হয় চুপি চুপি
দুপুর ১টা। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের পরিষদের (ইউপি) খাসেরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্রে বিভিন্ন বয়সী কয়েকজনের আনাগোনা। তাদের কেউ কেউ স্কুলপড়ুয়া। তারা চুপি চুপি কেন্দ্রের ভেতর আসছে। ভোট দিয়ে চুপিসারেই বেরিয়ে যাচ্ছে। তাদের ‘চাহিদামতো’ ব্যালট পেপার সরবরাহ করছেন নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। একই চেহারার দু-একজনকে দেখা যাচ্ছে বারবার। তারা সিল মারছে নৌকা প্রতীকে।
এমন সময় কয়েকজন সাংবাদিক ঢোকেন ওই কেন্দ্রে। তাঁদের উপস্থিতিতে অনেকটাই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা।
ওই ভোটকেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা এক হাজার ৫৫৬ জন। দুপুর ১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এক হাজার ৯৪ জনের। অথচ ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, এখন (দুপুর ১টা ৫) ভোটার উপস্থিতি কম হলেও সকালে অনেক ভোটার উপস্থিত ছিল। তাই তাড়াতাড়ি হয়ে গেছে।
এদিকে একই উপজেলায় ৩০০ ব্যালট পেপার ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের হামলায় দুই পুলিশসহ আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন।
দুপুর ১২টার দিকে কয়ারিয়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড ও ৭৬ নম্বর কয়ারিয়া বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসব ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
জানতে চাইলে বড়চর কয়ারিয়া বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ শিকদার জানান, শান্তিপূর্ণ ভোট চলাকালে হঠাৎ দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এ সময় তারা ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নৌকা প্রতীকে সিল মারতে থাকে। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আমির হোসেন বাধা দিলে তাঁকে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আহত করা হয়।
এ খবর আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারা বেশ কিছু ব্যালট পেপার উদ্ধার করে।
অন্য ১৭টি ইউনিয়নে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোটগ্রহণ হয়েছে।