তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীর নিহত : বিআরটিএ কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের জোকায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের মামলায় আরেকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা ও জেলা জজ আবদুল্লাহ আল-মামুন ফয়জুল কবীরের আদালতে এই সাক্ষ্য দেন জেলা বিআরটিএর তৎকালীন সহকারী পরিচালক আবদুস সাত্তার। আলোচিত এই মামলায় ৩৯ সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ১৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হলো।
মামলা ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শালজানা গ্রামে চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ তাঁর নতুন ছবি ‘কাগজের ফুল’-এর শুটিং লোকেশন নির্বাচনের জন্য আসেন।
তাঁর স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে এটিএন নিউজের সিইও মিশুক মুনীর, অধ্যাপক ঢালী আল মামুন ও তাঁর স্ত্রী দিলারা বেগম জলিসহ মোট নয়জন ওই সফরসঙ্গী ছিলেন।
ঢাকায় ফেরার পথে সাড়ে ১২টার দিকে ওই স্থানে তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসের (ঢাকা মেট্রো-চ-১৩-০৩০২) সঙ্গে বিপরীতমুখী চুয়াডাঙ্গাগামী চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের একটি বাসের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৪২৮৮) মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীর, মাইক্রোবাসচালক মোস্তাফিজুর রহমান, প্রোডাকশন সহকারী মোতাহার হোসেন ওয়াসিম ও জামাল হোসেন নিহত হন। আর তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, অধ্যাপক ঢালী আল-মামুন ও তাঁর স্ত্রী দিলারা বেগম জলি এবং তারেক মাসুদের সহকারী মনীশ রফিক আহত হন। এ ঘটনায় ঘিওর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমান মামলা করেন। এরপর অভিযান চালিয়ে বাসচালক জমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১১ সালের ১৭ নভেম্বর জেলা ও দায়রা জজকোর্ট থেকে চালক জমির হোসেন জামিনে ছাড়া পান। এরপর তদন্ত শেষে ঘিওর থানার তৎকালীন ওসি আশরাফ উল ইসলাম ২০১২ সালের ২১ মার্চ চালককে অভিযুক্ত করে ২৭৯/৩৩৭/৩৩৮(ক)/৩০৪ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আর একই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানি করা হয়। ২০১৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ধার্য করা সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনে জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোস্তফা দেওয়ানের আদালতে অভিযোগকারী ঘিওর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমানের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। ওই বছরের গত ২৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য দিনে মানিকগঞ্জ সাব জজ ও অতিরিক্ত দায়রা জজ রফিকুল ইসলামের আদালতে তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ঢালী আল মামুন ও তাঁর স্ত্রী দিলারা বেগম জলির সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এরপর কয়েকটি কার্য দিনে আরো ১০ জনের সাক্ষ্য নেন বিচারিক আদালত।
আজ মঙ্গলবারের কার্য দিনে সাক্ষ্যগ্রহণকালে রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ কে এম নুরুল হুদা রুবেল ও এপিপি আফছারুল ইসলাম মণি উপস্থিত ছিলেন।
এ কে এম নুরুল হুদা রুবেল জানান, বর্তমানে সিলেটে বিআরটিএর উপপরিচালক পদে কর্মরত মানিকগঞ্জের তৎকালীন সহকারী পরিচালক আবদুস সাত্তার সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামি বাসচালক জমির হোসেন হাইকোর্টে আরেকটি মামলার শুনানিতে হাজির থাকায় কাল বুধবার আবার শুনানি হবে।